কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে, ওজন বাড়ানোর উপায়
আমাদের মধ্যে অনেকেই, অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকেন। তবে আবার কিছু মানুষ রয়েছে যারা, শরীরে অপুষ্টি জনিত সমস্যার কারণে, ওজন বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। অনেকে আবার এটা জানার চেষ্টা করে, কোন ভিটামিন খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়। আমাদের সকলেরই জানা উচিত, নির্দিষ্ট কোন ভিটামিন আমাদের শরীরে, সরাসরি ওজন বাড়ায় না। তবে এই ভিটামিন গুলোর মধ্যে বেশ কিছু ভিটামিন রয়েছে, যেগুলো শারীরিক পুষ্টি জোগাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সরাসরি ভূমিকা রাখে, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার। আজকের আর্টিকেল টিতে, চলুন জানার চেষ্টা করি, কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে এবং ওজন বাড়ানোর উপায় গুলো সম্পর্কে। মনোযোগ সহকারে পড়ুন,কেননা আপনার শরীরে যদি ওজন কম থাকে, তাহলেই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে পারে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে, ওজন বাড়ানোর উপায়
- যে সকল ভিটামিন ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
- যে সকল খাবারে এই ভিটামিন গুলো পাওয়া যায়ঃ
- শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার উপায়।
- পুষ্টি উপাদান ক্যালরি গ্রহণের উৎসঃ
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের উৎসবঃ
- স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎসঃ
- এছাড়াও অন্যান্য যে সকল খাবার ওজন বাড়ায়ঃ
- শরীরের ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
- উপসংহার। কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে, ওজন বাড়ানোর উপায়
যে সকল ভিটামিন ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
আর্টিকেল টিতে উপরে বলা হয়েছে, সরাসরি কোন ভিটামিন আমাদের শরীরের ওজন বাড়ায় না। তবে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভেতরে, ভিটামিন বি১ এবং ভিটামিন বি ১২, ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এই ওজন বাড়ানোর জন্য ভিটামিন ডি এর ভূমিকাও রয়েছে। চলুন তাহলে এই ভিটামিন গুলো আমাদের, ওজন বাড়াতে যেভাবে কাজ করে সেগুলো সম্পর্কে জানা যাক। এবং কোন ধরনের খাবারে এই ভিটামিন গুলো পাওয়া যায়, এই সম্পর্কেও জানার চেষ্টা করি।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন বি১ ও ভিটামিন বি ১২ঃ
ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভেতরে, ভিটামিন বি১ ও ভিটামিন বি ১২ আমাদের শারীরিক সুস্থতায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সর ভিটামিন বি১, আমাদের পাকস্থলীর হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরে শক্তি শোষন সাহায্য করে। অন্যদিকে ভিটামিন বি ১২, পেটের ক্ষুধা বৃদ্ধি করার জন্য ভূমিকা রাখে, যা শরীরের ওজনের মাত্র নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এছাড়াও ভিটামিন বি ১২ শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং শরীরের জন্য পর্যাপ্ত শক্তির মজুদ রাখে। সামগ্রিকভাবে শরীরের সুস্থতা ও ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই ভিটামিনের বেশ গুরুত্ব রয়েছে।
ভিটামিন ডি এর ভূমিকাঃ
শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার জন্য, ভিটামিন ডি পরোক্ষভাবে যে সকল কাজকর্ম করে সেগুলো। ভিটামিন ডি আমাদের পেশীয় হাড়ের গঠনে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাবারের রুচি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যার জন্য পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি ,সম্পৃক্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। সঠিক মাত্রায় ভিটামিন ডি গ্রহণের ফলে এটি আমাদের স্বাস্থের উন্নতি ঘটায়, সঠিক বৃদ্ধিতে কাজ করে যা ওজন বৃদ্ধিতে প্রয়োজন।
এছাড়াও অন্যান্য ভিটামিন যেমন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই ও ভিটামিন এ সামগ্রিকভাবে ওজন বাড়ানোর জন্য কাজ করে। আমরা সকলেই হয়তো জানি, শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য ভিটামিনের গুরুত্ব কতটা। ঠিক তেমনি শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি, আমাদের সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণে এগুলো কাজ করে।
যে সকল খাবারে এই ভিটামিন গুলো পাওয়া যায়ঃ
আমরা অনেকেই ওজন বিদ্বী করার জন্য অনেক ধরনের, ওষুধের সম্মুখীন হই। তবে ওষুধ খেয়ে ওজন বৃদ্ধি করা দীর্ঘস্থায়ী হয় না, এছাড়াও অনেক সময় অনেকের বিপরীতমুখী কোন সমস্যা ও শরীরে দেখা দেয়। ওজন বৃদ্ধি করার জন্য অবশ্যই প্রাকৃতিকভাবে, শরীরিক অবস্থা অনুযায়ী, দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন এনে, সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা জরুরী। এজন্য উপরে উল্লেখিত ভিটামিন গুলো, যে সকল খাবারে রয়েছে, তা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ভিটামিন বি ১ ও বি১২ঃ
ভিটামিন বি১ ও ভিটামিন বি ১২ যে সকল খাবারে পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে, মাছ মাংস মুরগির ডিম দই পনির দুধ, এবং দুগ্ধজাত জাত খাবার খাওয়া উচিত। এছাড়া অন্যদিকে যারা নিরামিষ খায় তাদের জন্য, সবুজ শাক ,সয়া মিল্ক, সয়া রুটি ও পাস্তার মত খাবার খুবই উপযুক্ত।
ভিটামিন ডিঃ
ভিটামিন ডি, আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখা ও শরীরের শক্তি যোগানোর জন্য বেশ কাজ করে। এই ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন, স্যামন, টুনা ও ম্যাকেরেল মাছ উপযুক্ত। এছাড়াও স্যামন মাছে প্রচুর ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। ভিটামিন ডি এর জন্য আরো অন্যান্য যে খাবার খাওয়া যেতে পারে, চাইলে দুধ, মাশরুম, এছাড়াও সূর্যের রোদে ভিটামিন ডি এর মত উপাদান পাওয়া যায়।
ভিটামিন ই ও ভিটামিন সিঃ
ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি, শরীরের ওজন বৃদ্ধির জন্য পরোক্ষভাবে কাজ করে, তা উপরে জেনেছি। এই সকল ভিটামিন পাওয়া যায়, সূর্যমুখীর বীজ, বাদাম, পালং শাক, ব্রকলি ও এভোকারোর মতো খাবারে। এছাড়াও টক ফলে ভিটামিন সি এর মত উপাদান বিদ্যমান। আমাদের শরীরের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে এই সকল উপাদানের গুরুত্ব সকলেই হয়তো জানি।
শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার উপায়।
কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে, ওজন বাড়ানোর উপায়, আর্টিকেল টিতে ইতিমধ্যে, ওজন বাড়ানোর জন্য ভূমিকা রাখে,যে সফল ভিটামিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটাও উল্লেখ করা হয়েছে কোন ভিটামিন, সরাসরি শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে না। শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার জন্য, ক্যালোরি, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ অত্যন্ত জরুরী। এই সকল পুষ্টি সম্পৃক্ত, সফল খাবার খাওয়া, ওজন বাড়ানোর জন্য সরাসরি ভূমিকা রাখে, চলুন জানা যাক কোন খাবার গুলোতে ওজন বাড়ানোর পুষ্টি উপাদান রয়েছে ।
পুষ্টি উপাদান ক্যালরি গ্রহণের উৎসঃ
ওজন বৃদ্ধি করার জন্য, ক্যালোরি খুবই প্রয়োজন। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার, শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার জন্য সরাসরি ভূমিকা পালন করে। শরীরের পর্যাপ্ত ক্যালরি বাড়াতে যে সকল খাবার খাওয়া প্রয়োজন সেগুলো হল, ভাত, রুটি, পাসতা, মাখন, ঘি, মিষ্টি, কেক, চকলেট, আইসক্রিম, বাদাম, আখরোট, চিয়া বীজ ও তিসির বীজ খাওয়া যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে।
এছাড়াও অন্য কিছু খাবার রয়েছে যেমন, গাজর, শস্ তরমুজ, ডিমের সাদা অংশ মসুর ডাল চর্বিহিন মাছ দই ও পনিরের মতো উপাদানে, সামান্য পরিমাণে ক্যালরি পাওয়া যায়। এ সকল খাবার আমাদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য, শরীরের শক্তি জোগাতে, ভূমিকা পালন করে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের উৎসবঃ
শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার জন্য ক্যালরির পাশাপাশি প্রোটিনও, বেশ ভূমিকা পালন করে। এই প্রোটিন যে সকল প্রাণীজ উৎস থেকে আসে সেগুলো হল, গরুর মাংস, খাসির মাংস, মুরগি ও হাসের মাংসতে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়। মাছের ভিতরে ইলিশ, রুই, কাতলা, স্যামন ও টুনা মাছেও পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। এছাড়াও বিশেষ করে ডিমের সাদা অংশে, পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে, অন্যদিকে দই, পনির ও দুধেও প্রোটিন বিদ্যমান।
অন্যদিকে যেকোনো ধরনের ডাল, মসুর ডাল মুগ ডাল সহ যেকোনো ডালে প্রোটিন পাওয়া যায়। , মটরশুটি, শুকনো ফল, ছোলা, যেকোনো বাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। কিছু শস্য ও সবজির মধ্যে যেমন কুইনোয়া, ব্রাউন রাইস, আলু, ব্রকলি ও অ্যাসপারাগাসের মত সবজিতেও প্রোটিন রয়েছে।
স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎসঃ
স্বাস্থ্যকর চর্বিও শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে, কম ভূমিকা পালন করে না। স্বাস্থ্যকর চর্বি, যে সকল খাবারে পাওয়া যায় সেগুলো হল, অ্যাভোকাডো যা শরীরের সুস্থতার জন্য উপকারী। বাদাম ও বীজ যেমন, কাঠবাদাম, আখরোট, জিয়া বীজ, চর্বি ও ফাইবার গ্রহণ করা যেতে পারে। তৈলাক্ত মাছেও পর্যাপ্ত চর্বি পাওয়া যায়। কিছু তেলও স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎস যেমন, জলপাই তেল, সরষের তেল, তিলের তেল ও কেনলা তে্লে, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে। এছাড়াও কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মিষ্টি আলুতেও কিছু স্বাস্থ্যকর চর্বির পরিমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়াও অন্যান্য যে সকল খাবার ওজন বাড়ায়ঃ
কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে, ওজন বাড়ানোর উপায়, আর্টিকেল টিতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু, ওজন বাড়ানোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে। ওজন বাড়ানোর জন্য শুধু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলেই হবে না, এজন্য ওজন বাড়ানোর পুষ্টিগুণ সম্পৃক্ত খাদ্য খাবারের গুরুত্ব অপরিশীম। আপনি যদি চান, রাতে কিছু কিসমিস ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে, তাও ওজন বাড়াতে ভুমিকা পালন করে। এছাড়াও অন্যান্য কিছু পুষ্টিকর খাবার রয়েছে, যেগুলো শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভূমিকার রাখে।
শরীরের ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
শরীরের ওজন কম থাকলে আমাদের দুশ্চিন্তা হয় অনেকেরই। অনেক সময় ওজন বাড়ানোর জন্য, অনেকে, অনেক ধরনের ওষুধ বা, অনেক শর্টকাট পন্থা অবলম্বন করে। এক্ষেত্রে দেখা যায় কিছুদিনের জন্য ওজন বাড়লেও, স্থায়ী হয় না বরং শরীরে যেকোনো রোগের বৃদ্ধি করতে পারে। এজন্য আমাদের মাথায় রাখতে হবে, শরীরের ওজন কমে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যগত কোনো কারণও হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কি ফল খেলে লিভার ভাল থাকে।
এজন্য অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে, ওজন কমার কারন নির্ণয় কারে, এরপরে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম পন্থা হলো প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্যকর খাবার রুটিনে রাখা।
উপসংহার। কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে, ওজন বাড়ানোর উপায়
কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে, ওজন বাড়ানোর উপায় আর্টিকেল টিতে, ইতিমধ্যে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের প্রত্যেকেরই শরীরের যত্নে যত্নবান হওয়া উচিত। আমাদের সুস্থ সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান জীবন যাপনের জন্য, খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখা অত্যন্ত জরুরি। তবে প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে, বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্্ চাইলে নিয়মিত ব্যায়ামও করতে পারেন, কেননা পেশী গঠনে ব্যায়ামের গুরুত্ব রয়েছে।
আপনার যদি শরীরে ওজন কম থাকে, এবং ওজন বৃদ্ধি করতে চান। তাহলে সব থেকে উপযুক্ত হবে, দৈনন্দিনীর খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। কেননা হুট করে খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনলে,অন্য কোন সমস্যা ও দেখা দিতে পারে। যাইহোক আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
(খোদা হাফেজ)



ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url