কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রন হয়

ত্বকের যত্নে নারীরা এগিয়ে থাকলেও, বর্তমান সময়ে অনেক পুরুষ মানুষ রয়েছে,যারা ত্বকের যত্নে অটুট থাকে।তবে আমাদেরকে ত্বকের, বিভিন্ন ধরনের চুলকানি ও ব্রণের মতন সমস্যায় অনেক সময় পড়তে হয়। নারী হোক কিংবা পুরুষ সকলের জন্য ব্রণ, একটি লম্বা সময় সমাধান না হওয়া সমস্যা। ত্বকে ব্রণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা, অসাস্থকর খাবার খাওয়া, ও হরমোনের সমস্যা হলেও ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে ব্রণ হওয়ার গুরুতর কারণ এর মধ্যে, শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি, দেখা দেওয়া অন্যতম।

মুখে

আজকের আর্টিকেলটিতে আপনাদের সাথে, আলোচনা করতে যাচ্ছি, কোন ভিটামিনের অভাবে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিনের অভাবে ত্বকের, ব্রণের কোন সমস্যা হলে এটাকে, গুরুতর সমস্যা হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। কথা না বাড়িয়ে চলুন, জানা যাক কোন ভিটামিনের অভাবে ব্রণের সমস্যা হয়। 

পোস্ট সুচিপত্রঃ কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রন হয়

কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয়।

আজকের আর্টিকেলটির মূল আলোচ্য বিষয়, কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয়। মুখে ব্রণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে তা আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। মুখে ব্রণ হওয়ার সাধারণ যে সকল সমস্যা রয়েছে, এর বাইরে ও ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে, ব্রণ সহ ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আমাদের ত্বকের চর্ম জনিত সমস্যা সমাধানে, এই সকল ভিটামিনের গুরুত্ব অপরিসীম। 

ভিটামিন ডিঃ

শরীরে ভিটামিন ডি, এর অভাবের ফলে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা ভিটামিন ডি এর অভাবে, আমাদের ত্বকের প্রদাহ বাড়ায় যার কারনে ত্বকের স্বাভাবিক কার্যকারিতা নষ্ট হয়। সূর্যে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি এর মাত্রা থাকে, তাহলে এটি প্রদাহ, কমায় ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ব্রণ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করতে পারে। যখনই শরীরের কোন পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়, তখনই ব্রনের মস্যা দেখা দেওয়ার শুরু করে।

ভিটামিন বি ১২ঃ 

শরীরে যদি ভিটামিন বি ১২, এর ঘাটতি দেখা দেয় এক্ষেত্রে ব্রণের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এই সমস্যায় শুধু যে, ভিটামিন বি ১২, এর গুরুত্ব রয়েছে ব্যাপারটা এমন নয়। ভিটামিন বি১২ ও ভিটামিন বি ৬ এর অভাব দেখা দিলে ত্বকের প্রচুর ক্ষতিসাধন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর কারণে শুধু ব্রনই হয় এমন নয়, হাইপার পিগমেন্টেশন এবং চুলকানির মতন সমস্যা হতে পারে। আমাদের শারীরিক সুস্থতা এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে  এই সকল ভিটামিনের গুরুত্ব রয়েছে। 

 ভিটামিন ইঃ

আমাদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিনের গুরুত্ব, এখন সকলেরই জানা। চর্ম বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন ই, সরাসরি ব্রনের কারণ নয়, তবে অনেক ক্ষেত্রে এটি ব্রণের সমস্যা বাড়াতে পারে। কেননা ভিটামিন ই তে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা আমাদের ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং ব্রণ থাকলে, তা সমাধানেও কাজ করে।

শরীরে যদি ভিটামিন ই এর অভাব হয় তাহলে ত্বকের স্বাভাবিক কার্যকারিতা, ব্যাহত হতে পারে, যা ব্রণের সমস্যা সৃষ্টি করার দিকে ধাবিত করে। এছাড়াও ভিটামিন এ এর অভাবেও, ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেওয়া সম্ভাবনা থাকে। 

ব্রণের সমস্যা সমাধানে, যে সকল পুষ্টি উপাদানের ভূমিকা রয়েছে।

কোন ভিটামিনের অভাবে ব্রণের সমস্যা হয় তা আমরা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছি। শুধু যে ব্রনের সমস্যা ভিটামিনের অভাবে হয় এমন নয়। শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিলে ব্রণের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ব্রণ হোক কিংবা চুলকানি ত্বকের যেকোনো সমস্যার, হাত থেকে বাঁচতে, অবশ্যই আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখবে এমন পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করা উচিত। ঠিক তেমনি ব্রণের  সমস্যার সমাধানে, এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই প্রয়োজন। 

এগুলোর মধ্যে রয়েছে জিঙ্ক, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন বি ২, ভিটামিন বি ৬ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করা জরুরী। কেননা এ সকল পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের, ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, এবং ত্বকে স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এই সকল উপাদান আমাদের ত্বকের ব্রণ, হওয়ার ব্যাকটেরিয়া রোধে কাজ করে। 

ব্রণের সমস্যায় পুষ্টির অভাব পূরণে যে সকল খাবার খেতে হবে। 

শারীরিক সুস্থতায় যেমন পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। ঠিক তেমনি ব্রণের সমস্যার শারীরিক পুষ্টির অভাব পূরণের, বেশ কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো খাওয়া জরুরি। যে সকল খাবার ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই, সমৃদ্ধ এগুলো খাওয়া জরুরি। তাছাড়া ফাইবার যুক্ত খাবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ মাছ খাওয়াও উপকারী হতে পারে। চলুন জানা যাক, কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয়, এই আর্টিকেল টিতে ব্রনের, সমস্যা সমাধানে যে সকল খাবার খাওয়া জরুরী সেগুলো সম্পর্কে। 

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারঃ

আর্টিকেল টির উপরে আমরা, জানতে পেরেছিলাম কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয়। সাধারণত আমরা যদি দৈনন্দিনীর খাদ্য তালিকায়, সেই সফল ভিটামিনযুক্ত খাবার রাখি, তাহলে এটা ব্রণের সমস্যায় কাজ করতে পারে। ঠিক তেমনি এই ভিটামিন গুলোর মধ্যে ভিটামিন ডি ও রয়েছে। ভিটামিন ডি, যুক্ত খাবার যেগুলো রয়েছে সেগুলো নিচে ক্রমান্বয়ে আলোচনা করা হলো। 

আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামনের অভাবে গা ঘামে।


মাছঃ সাধারণত চর্বিযুক্ত যে মাছ, সেই সকল মাছে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, এগুলো হলো স্যামন, টুনা, ম্যাকেরেল, রূপচাঁদা, ইলিশ, মলা ইত্যাদি বেশ কিছু, চর্বিযুক্ত মাছে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।

মুখে


শাকসবজিঃ শাকসবজির মধ্যে, ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজি খুব কম রয়েছে। তবে শাকসবজির মধ্যে কিছু, শাকসবজি রয়েছে যেগুলোর মধ্যে কিছু পরিমাণে ভিটামিনটি পাওয়া সম্ভব। এই শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে মাশরুম, পালং শাক, ব্রেকলি ইত্যাদী। এছাড়াও ডিমের কুসুমে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, পর্যাপ্ত পরিমাণে।

সূর্যের আলোঃ আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণের জন্য, চাইলে দৈনিক কিছু সময়, নিজেদের শরীরে সূর্যের আলো অতিবাহিত করা। কেননা সূর্যের আলো আমাদের ত্বকের জন্য ভিটামিন ডি তৈরি করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন এ ও সিঃ

ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি এর অভাবে, মুখে ব্রণ হওয়ার সমস্যা হতে পারে। এই ভিটামিন এ, ও ভিটামিন সি পূরণের জন্য যে সকল খাবার খেতে হবে সেগুলো হল। 

ফল ও সবজিঃ ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি এই দুটি উপাদান, গাজর, কমলালেবু, আমলকি, পেপে, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, মিষ্টি আলু, আম, কুমড়া,  কাঁচা মরিচ পালং শাক ও টমেটাতে, ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এই সকল ফল ওসবজি, সুধু ব্রণের সমস্যায় কাজ করে এমন নয়। শারীরিক সুস্থতায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, এই সকল ফল ও সবজি অনন্য ভূমিকা পালন করে। 

অন্যান্য খাবারঃ ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি এর উৎস আরো কিছু খাবারের রয়েছে, যেমন ডিম, যেকোনো কলিজা, দুগ্ধজাত পণ্যতে ভিটামিন গুলো পাওয়া যায়। তাছাড়া কিছু মসলাতেও ভিটামিন সি রয়েছে, এগুলো হলো পুদিনা পাতা ও পার্সলে পাতা। 

ভিটামিন ইঃ  

বাদাম ও বীজঃ কাজুবাদাম ও চিনা বাদাম ইত্যাদিতে ভিটামিন ই রয়েছে। এছাড়াও কিছু বিজেও ভিটামিন ই পাওয়া যায়, যেমন কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ এবং এভোকাডোতেও ভিটামিন ই উপাদান রয়েছে। 

তেলঃ কিছু তেল রয়েছে যেগুলোতে ভিটামিন এ পাওয়া যায়, এগুলোর মধ্যে সূর্যমুখী তেল, জলপাই তেল, সয়াবিন তেল ও ক্যানোলা তেল ইত্যাদী ভিটামিন ই এর গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এছাড়াও ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড এবং প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া জরুরী। এর জন্য দই মটরশুটি, মাছ ও আখরোট খাওয়া যেতে পারে।

পানি পান করাঃ পানির অপর নাম জীবন, বেঁচে থাকার জন্য ঠিক যেমন পানি প্রয়োজন। আমাদের শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও, পানির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এক কথায় বলতে গেলে, শরীরের যেকোনো সমস্যা সমাধানে, পানি খাওয়া ছাড়া কোনমতেই উপায় নেই। তাই প্রতিনিয়ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার চেষ্টা করবেন।

আরো পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার উপায়। 

ব্রনের ক্ষেত্রে যে সকল সতর্কতা রয়েছে।

ত্বকে ব্রণের সমস্যা, একদমই নাছোড়বান্দা, ব্রণের সমস্যা হলে খুব সহজে সমাধান করা সম্ভব হয় না। যে সকল ভিটামিনের অভাবে ত্বকে ব্রণ হয়, এই পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করলে, এবং সতর্কতা মেনে জীবন যাপন করলে, হয়তো ব্রণের সমস্যা, থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। যাইহোক ব্রনের সমস্যা বেশ কিছু সতর্কতা রয়েছে, যেগুলো আমাদের মেনে চলা উচিত। চলুন যানা যাক, বনের সমস্যা সতর্কতা গুলো কি।

  • মুখে ব্রণ হলে, অবশ্যই তেল, চিনি এবং অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার ও প্রক্রিয়াজাত খাবার যতটা সম্ভব সীমিত পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কেননা এগুলো ব্রণের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। 
  • ত্বক সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা অত্যন্ত জরুরি, এবং পুরুষের ক্ষেত্রে, ব্রণের সমস্যায় অতিরিক্ত সেভ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। ত্বক পরিষ্কার করার সময়, অতিরিক্ত জোরে ঘষে পরিষ্কার করা থেকে বিরত থাকুন। 
  • আমরা অনেকেই বাইরের ভাজা পোড়া খাবার খেয়ে থাকি, এই সকল ভাজাপোড়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং কিছু আয়োডিনযুক্ত নির্দিষ্ট খাবার, যেমন কিছু সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে চলুন। 
  • অতিরিক্ত আঠালো এবং তৈলাক্ত ক্রিম ও লোশন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উত্তম। কেননা অতিরিক্ত আঠাল এবং তৈলাক্ত ক্রিম বা লোশন ছাড়া, তেলমুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও মুখে হাত লাগানোর আগে অবশ্যই হাত পরিষ্কার আছে কিনা তা খেয়াল করুন। 

উপসংহার। কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয় 

আজকের আর্টিকেলটি, কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ব্রণ হয়। ত্বকে ব্রণ যে কোন কারনে হতে পারে, তা সকলেই এখন জানি। তবে ভিটামিনের অভাবে ব্রণ হওয়া, এটা ব্রণ হওয়ার গুরুতর সমস্যা, তা আর্টিকেল টির উপরে বলা হয়েছে। এবং এ সকল ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে, যে ধরনের খাবার খাওয়া জরুরী, তাও আমরা জেনেছি। ব্রনের সমস্যা হলে সাধারণত খুব সহজে ছাড়তে চায় না। এক্ষেত্রে অবশ্যই কারো ব্রণ হলে,  ব্রনের সমস্যা নিশ্চিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।  

ব্রণের সমস্যা সমাধানে, যে সকল সতর্কতা রয়েছে সেগুলো মেনে চলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কেননা ত্বকে ব্রণ থাকলে, সতর্কতা না মেনে চললে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। যেটা হতে পারে শারীরিক বড় কোন সমস্যার, মাধ্যম। এতক্ষণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের অর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। 

                         (খোদা হাফেজ)




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url