কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
ডায়াবেটিস নামটা, মানব শরীরের জন্য খুবই নিয়ম নীতির সাথে জীবন যাপনের একটি অধ্যায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন ব্যক্তি চাইলে, সম্পূর্ণরূপে ডায়াবেটিস কমানো তার পক্ষে সম্বব নয়। তবে দৈনন্দিনীর খাদ্য তালিকায় ও জীবনযাত্রায়, পরিবর্তন এনে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা ও সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করা সম্বব।কেননা ডায়াবেটিসকে যদি নিয়ন্ত্রণে না রাখা হয়, তাহলে এটি আমাদের জন্য খুবই ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।
আজকের আর্টিকেল টিতে, কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করব। একজন ডায়বেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির, অবশ্যই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
- মানব শরীরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারনগুলি।
- শরীরের পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরির অভবেঃ
- বংশগত বা জিনগত কারণেঃ
- শারীরিক পরিশ্রমের অভাব ও অতিরিক্ত ওজনঃ
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস ও ধূমপানের কারণেঃ
- বয়স বাড়া এবং অন্যান্য রোগঃ
- শরীরে ডায়াবেটিসের সমস্যায় যে সকল লক্ষণ দেখা দেয়।
- কি খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়।
- ডায়াবেটিসের সমস্যা হলে যে সকল খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
- ডায়াবেটিসের সমস্যায় শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করুন।
- ডায়াবেটিসের সমস্যার ক্ষেত্রে যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
- শেষ কথা। কি খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
মানব শরীরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারনগুলি।
মানব শরীরের জন্য ডায়াবেটিস খুবই নিয়ম নীতির একটা নাম, এটা উপরে আমরা জেনেছি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখার ফলে, শরীরে বিভিন্ন ধরনের বড়সড় রোগের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সকল রোগের ভিতরে, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, চোখের সমস্যা, স্নায়ুর ক্ষতি ও কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যায়।
এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে, পায়ে পচনশীল ক্ষতর মতো জটিলতা ও দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ফলে, একজন মানুষের আয়ু কমে যেতে পারে, এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। যাইহোক শরীরের ডায়াবেটিস দেখা দেওয়ার যে সকল কারণ রয়েছে, চলুন সেগুলো সম্পর্কে এখন জানা যাক।
শরীরের পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরির অভবেঃ
মানব শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না হলে, ডায়াবেটিস এবং ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিসের মত গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ইনসুলিনের অকার্যকারিতার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকাংশে বেড়ে যায়, এ কারণে সাধারণত গ্লুকোজ কোষের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না, সঠিকভাবে শক্তি উৎপাদনে ব্যাহত হয়। ডায়াবেটিস হওয়ার প্রধান কারণ বলে বিবেচনা করা যায়, শরীরের পর্যাপ্ত ইনসুলিনের ঘাটতি দেখা দেওয়া কে।
বংশগত বা জিনগত কারণেঃ
বংশগত বা জিনগত কারণে ডায়াবেটিস হওয়া, সাধারণ কারণের মধ্যেও অন্যত্ বিবেচনা করা যায়। বংশগত বা জিনগত কারণে বিশেষ করে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা অনেক অংশে বেড়ে যায়। পরিবারের যদি কারো পূর্বে ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে, তাহলেও শরীরে ডায়াবেটিস দেখা দেওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায়, মনোজেনিক ডায়াবেটিস নামে এক ধরনের ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শারীরিক পরিশ্রমের অভাব ও অতিরিক্ত ওজনঃ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ থাকার জন্য হলেও পরিশ্রম প্রয়োজনীয়। আমাদের দেশের মানুষ সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অলস, এই অলসতাই হতে পারে, ডায়াবেটিস হওয়ার মতো সমস্যা। আপনি যদি বাড়িতে বসে থাকেন কোন কাজকর্ম না করেন, তাও দৈনিক নিয়ম করে অল্প সময় হলেও ব্যায়াম করা জরুরী।
কোন কাজকর্ম না করে বাসায় বসে, খেয়েও ঘুমিয়ে সময় কাটাচ্ছেন, যার কারনে প্রতিনিয়ত শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনার যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে ডায়াবেটিসের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই শারীরিক ওজনের দিকেও নজর দেওয়া জরুরী।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস ও ধূমপানের কারণেঃ
আমাদের জীবনটা অনেক দিনের, জীবনের হিসাবে সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, এবং সুস্থতার জন্য পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত জরুরী। বাইরের ভাজাপোড়া ফাস্ট ফুড জাতিয় খাবার, অতিরিক্ত তেল চর্বি ইত্যাদি অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর, যে সকল খাবার রয়েছে, এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কেননা অস্বাস্থ্যকর খাবার বেশি পরিমাণে খেলে, এবং অনেকদিন ধরে ক্রমান্বয়ে খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। ধূমপান থেকেও বিরত থাকা উচিত, কোন কোন ক্ষেত্রে ধূমপানের কারণেও ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বয়স বাড়া এবং অন্যান্য রোগঃ
প্রতিদিনই প্রত্যেকে বয়স বেড়েই চলছে, এই বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকের, ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা মানব শরীরের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের কার্যক্ষমতা ও হ্রাস পায়। এছাড়াও অন্যান্য অসুস্থতা যেমন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মত সমস্যা সৃষ্টি করে। শুধু উচ্চ রক্তচাপি নয় উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা ও ডায়াবেটিসের সমস্যা সৃষ্টি করার জন্য ভূমিকা রাখতে পারে।
শরীরে ডায়াবেটিসের সমস্যায় যে সকল লক্ষণ দেখা দেয়।
আর্টিকেলটির উপরে আমরা ইতিমধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার বেশ কিছু কারণ জানতে পেরেছি। মানব শরীরে ডায়াবেটিসের সমস্যায়, খুবই খারাপ ভূমিকা রাখ্ তাও, বলা হয়েছে। আমরা হয়তো অনেকেই জান্ আবার অনেকেই জানিনা, শরীরে ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিলে যে ধরনের লক্ষণ দেখা দেয় সেগুলো সম্পর্কে। চলুন কি খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয় বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় আর্টিকেল টিতে, জানা যাক ডায়াবেটিসের সমস্যার শরীরের যে সকল লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- প্রাথমিক অবস্থায় যদি ডায়াবেটিসের লক্ষণ শরীরে, দেখা দেয় তাহলে অতিরিক্ত পিপাসা লাগতে পারে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, বিশেষ করে রাতে, প্রসাবে পরিমাণ অনেকাংশে বেড়ে যায়।
- শরীরের ওজন হঠাৎ করে কমে যেতে পারে, কোন কারণ ছাড়াই। শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্লান্তির দেখা দিতে পারে, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রামের পরেও শরীরের ক্লান্তি না যাওয়ার সমস্যা থাকে।
- শরীরের কোথাও কোন ক্ষত বা ঘা হলে তা কমতে অনেক সময় লাগে। অনেক সময় ছোট একটা ঘা থেকে অনেক বড় ধরনের ইনফেকশন দেখা দেওয়াও, ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে অন্যতম।
- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন ব্যক্তির, ধীরে ধীরে চোখে সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় চোখে ঝাপসা দেখা এটাও প্রধান কারনের, মধ্যে পড়ে। তাছাড়াও শরীরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ খুব ঘন ঘন দেখা দিতে পারে।
- শরীরের রক্তের শর্করা মাত্রা বেশি থাকার কারণে, শরীরের কোষগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে শক্তি সরবরাহ করতে পারে না, এজন্য অতিরিক্ত ক্লান্তির মত সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়াও অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগার মতন সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- ডায়াবেটিসের ফলে মেজাজের পরিবর্তন ঘটতে পারে, কেননা ডায়াবেটিসের লক্ষণ শরীরে দেখা দিলে রক্তে উচ্চ শর্করার কারণে মানব শরীরে বিভিন্ন ধরনের সিস্টেম পরিবর্তনের ফলে, মেজাজ পরিবর্তন হয়।
- শরীরের ত্বক মুখ ও মাড়িতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিসের সমস্যা শরীরে দেখা দিলে, ত্বক মুখ সুস্ক হয়ে যায়, কেননা সে সময় শরীরে পানির পরিমাণ কমে যায়। সর্বোপরি শেষ কথা হলো, ডায়াবেটিসের সমস্যা আমাদের শারীরিক যেকোনো অসুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরে ডায়াবেটিসে সমস্যা হলে অবশ্যই এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত ভাল হয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়।
কি খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয় এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডায়াবেটিস সমস্যার ক্ষেত্রে। মানব শরীর থেকে ডায়াবেটিস একেবারে নিরাময়, কোন মতেই সম্ভব নয়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী শুধুমাত্র, এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অবশ্যই জীবনযাত্রায় ও দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকায়, পরিবর্তনে সব থেকে অন্যতম ও প্রধান মাধ্যম। চলুন তাহলে এখন জানা যাক, কি খেলে ডায়েবেটিস ভালো হয়, এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখার উপায় গুলো সম্পর্কে যানা যাক।
শাকসবজির মধ্যে যেগুলো খাওয়া যাবেঃ
আমরা সকলে জানি ডায়াবেটিস সমস্যা হওয়ার সব থেকে প্রধান মাধ্যম হলো রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে। আমাদের শরীরের ডায়াবেটিস হলে তা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য অবশ্যই রক্তের শর্করার মাত্রা, নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরী। রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে, এমন কিছু শাকসবজি যেমন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটা, পালং শাক, করলা ও অ্যাসপারাগাছ জাতীয় শাকসবজি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অনন্য ভূমিকা পালন করে।
ফলের মধ্যে যেগুলো খাওয়া যাবেঃ
ফলের মধ্যে যেকোন, ফলই আমাদের শারীরিক সুস্থতায় অনন্য ভূমিকা পালন করে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং পর্যাপ্ত ফাইবারযুক্ত ফলমূল। এই সকল ফলের মধ্যে যেগুলো খাওয়া যাবে সেগুলো হল, বেরি, আপেল, বেদানা, পেয়ারা, আঙ্গুর, কি ইউ, চেরি ও পেঁপে এই সকল ফলে কম গ্লাইসামিক ও পর্যাপ্ত ফাইবার পাওয়া যায়।
সাধারণত এই সকল ফলে সরকরার পরিমাণ অনেক কম থাকে এবং ফাইবারের মাত্রা বেশি থাকে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, এবং ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করে। চাইলে যে কোন ফলই পরিমাণ মতো খেতে পারেন, তবে অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম।
অন্যান্য খাবার যেগুলো খাওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, দৈনন্দিন এর জীবনযাত্রায় খুবই নিয়ম নিতীর সাথে চলতে হয় তা আমরা সকলেই এখন জানি। ঠিক তেমনি শাকসবজি ও ফলমূল বাদে, অন্য আরো কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রোটিন সরবরাহ করে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শাকসবজি এবং ফলমূল বাদে যে সকল খাবার খাওয়া উচিত, সেগুল হল।
ওটস,ব্রাউন রাইস, ডাল, কম চর্বিজুক্ত মাছ, যেমন স্যামন ও ম্যারাকেল, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ। ডায়াবেটিসের সমস্যায় ডাল ও খাওয়া যেতে পারে যেমন, মসুর ডাল, মুগ ডাল ও সোলা এগুলো প্রোটিন ও ফাইবারের একটি ভালো উৎসব। আমরা সকলে হয়তো জানি চিনি ডায়াবেটিসের জন্য খুবই ক্ষতিকর, তবে কৃত্রিম মিষ্টিও খাওয়া যেতে পারে, চিনির বিকল্প হিসেবে।
ডায়াবেটিসের সমস্যা হলে যে সকল খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
কি খেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা ভালো হয়, এবং যে ধরনের খাবার ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে তা সম্পর্কে ইতিমধ্যেই আলোচনা করা হয়েছে। ঠিক যেমন, এমন কিছু খাবার আমাদের ডায়াবেটিসের সমস্যার ক্ষেত্রে উপকারী, আবার ঠিক তেমনি কিছু খাবারো রয়েছে যেগুলো খাওয়া কোনমতেই উচিত নয়। উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলা উচিত, কেমননা শর্করাই ডায়াবেটিসের সব থেকে বড় শত্রু। এখন তাহলে জানা যাক, কোন ধরনের খাবার ডায়াবেটিসের সমস্যায় এরিয়ে চলা উচিত।
- শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিসের সমস্যা সৃষ্টি হয়, এটা ডায়াবেটিসের সমস্যা সব থেকে প্রধান কারণ বলে বিবেচিত। যে সকল খাবারে শর্করার পরিমাণ বেশি এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে, এগুলোর মধ্যে সাদা চাল, ময়দার রুটি, মিষ্টি ও মুড়ি ইত্যাদী এড়িয়ে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- অনেক সময় অনেকে, বাহির থেকে যে সকল প্যাকেটজাত খাবার কিনে খেয়ে থাকি, এগুলো না খাওয়া উত্তম। এই সকল খাবার মধ্যে যেমন চিপস, বিস্কুট, কেক ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত।
- মিষ্টি ডায়াবেটিসের সব থেকে বড় শত্রু, এজন্য চিনি থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন। তাছাড়া মিষ্টি পানীয় যেমন কোলড্রিংস এবং এনার্জি ড্রিংকস জাতীয় যেকোনো খাবার থেকে বিরত থাকুন। প্যাকেট জাত, যে সকল ফলের রস পাওয়া যায়, সেগুলোও না খেতে পারলে খাবেন না।
- অতিরিক্ত ভাজাপোড়া এবং তেল যুক্ত খাবার ও ডায়াবেটিসের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে ভূমিকা পালন করে। অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার এবং ভাজাপোড়া থেকে বিরত থাকা সবচেয়ে উত্তম। এই সকল খাবার ডায়াবেটিসের সমস্যা তৈরির জন্য ভূমিকা রাখে তা উপরে আমরা জেনেছি।
- অ্যালকোহল ,মদ্যপান বা ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, এগুলো ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য খুবই ঝুঁকির সৃষ্টি করে। ডায়াবেটিস সমস্যা একটি নিয়ম নীতির নাম, তাতো আমরা এখন সকলেই জানি। অতএব সর্বপ্রথম আমাদের খাবারের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। খাবারের ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার ফলেই কেবল মাত্র ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ডায়াবেটিসের সমস্যায় শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করুন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অবশ্যই ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরী। কেননা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে ব্যায়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যায়াম করলে এটি শরীরের ইনসুলিন এর কার্যকারিতা বাড়ায়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। ডায়াবেটিসের সমস্যার জন্য অনেক পরিমাণ ব্যায়াম করা লাগবে ব্যাপারটা এমন নয়। প্রতিদিন নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময়ে, ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করলে এর ফলাফল পাওয়া যাবে।
আপনি চাইলে দৈনিক পরিমাণ মতো, ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন। তাছাড়া সাইকেলিং করা ও সাঁতার কাটার মত কাজ ও করা যেতে পারে। এতে করে পেশীতে গ্লুকোজের সঠিক ব্যবহার হবে যা রক্তে সরকরার মাত্রা কমাতে ভূমিকা পালন করে। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য সাধারণত হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে, এই ধরনের ব্যায়াম হৃদপিন্ডের, স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, যা ডাইবেটিসের রোগীদের জন্য খুবই স্বাস্থ্য উপযোগী।
ডায়াবেটিসের সমস্যার ক্ষেত্রে যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
কি খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয় বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়, সম্পর্কে আর্টিকেলটিতে উপরে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ডায়াবেটিস খুবই নিয়ম নিতীর একটি নাম, ডায়াবেটিস হলে নিয়মিত, ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা অবশ্যই প্রয়োজন। শারীরিক সুস্থতার দিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরী, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দৈনন্দিনীর রুটিন নির্ণয় করা উচিত। শারীরিক ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরী, যা ডায়াবেটিসের সমস্যায় অনন্য।
আমাদের মধ্যে কারো ডায়াবেটিসের সমস্যা হলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা ভয় পেয়ে যাই। ডায়েবেটিসের সমস্যায় ভয় পাওয়ার কোন কারণই নাই, জীবনযাত্রায় ও খাদ্য তালিকায় পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে না হলেও, ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে এজন্য অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে, তার পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করার চেষ্টা করবেন।
শেষ কথা। কি খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা ডায়াবেটিস সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জেনেছি। আপনার বা আপনার পরিবারের যদি কারো, ডায়াবেটিস হয় বা, ডায়াবেটিস সংক্রান্ত লক্ষণ গুলো দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যদি কোন ওষুধ গ্রহণ করতে বল্ তাহলে তাই করতে হবে। মনে রাখবেন, ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে না রাখলে, কেড়ে নিতে পারে একজন মানুষের জীবন ও।
ডায়াবেটিস সমস্যাটাকে কোনোমতেই অবহেলা করলে চলবে না, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। ডায়াবেটিসের সমস্যায় নিয়ম নিতীর সাথে চললে, সুস্থ থাকবেন আপনি সুস্থ থাকবে আপনার পরিবার সুস্বাস্থ্যে কাটাতে পারবেন আপনার জীবন। এতক্ষণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, আজকের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন।
(খোদা হাফেজ)



ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url