কিডনি রোগ কি ভাল হয়? কিডনির সমস্যা নিয়ন্ত্রনে রাখার উপায়

আজকের আর্টিকেলটির বিষয় হচ্ছে, কিডনির রোগটি ভালো করা সম্ভব এবং কিডনির সমস্যা নিয়ন্ত্রনে রাখার উপায় এ বিষয়ে। কিডনি আমাদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অঙ্গ, এ ব্যাপারটা আমাদের কারো কাছেই অজানা নয়। তবে যদি এই কিডনি অঙ্গটি বিকল হয়ে যায় তাহলে কি? ভালো করা সম্ভব? আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য, কিডনিকে  সুস্থ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়। কেননা আমাদের শরীরের অপ্রয়োজনে বর্জ্য, কিডনি ছেকে বের করে দেয়।

kidni

কথা না বাড়িয়ে চলন, তাহলে জেনে নেয়া যাক কিডনি রোগ কি ভালো হয় এই ব্যাপারে। মনোযোগ সহকারে আজকের আর্টিকেলটি পড়ুন, সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনের জন্য অবশ্যই আমাদেরকে নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ কিডনি রোগ কি ভাল হয়? কিডনির স্বাস্থ ভাল রাখার উপায়

কিডনির সমস্যার লক্ষণ যেভাবে বুঝবেন। 

কিডনি রোগী ভালো হয়, এই ব্যাপারটা জানার আগে আমাদের জানতে হবে যে, আমাদের কিডনিতে সমস্যা হয়েছে কিনা বুঝবো কিভাবে। কিডনির সুস্থ আছে কিনা এটা জানার জন্য অবশ্যই আমাদের, কিডনি টেস্ট করাতে হবে। কিডনি সুস্থতায়, রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা পুরুষের ক্ষেত্রে এক রকম, এবং নারীদের ক্ষেত্রে অন্যরকম। তাহলে চলুন জানা যাক, আমাদের কিডনি সুস্থ আছে কিনা তা যেভাবে বুঝবেন। আমাদের কিডনির জন্য সাধারণত, একজন পুরুষের ক্ষেত্রে, রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ০.৬-১.১ মিলিগ্রাম হয়ে থাকে। একজন নারীর ক্ষেত্রে কিডনির জন্য ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা, থাকতে হবে সাধারণ অবস্থায় ০.৫-১.১ মিলিগ্রাম বা ডেসিলিটার। 

শরীরে যদি ক্লান্তি ভাব, ফোলা ভাব,প্রস্রাবের রং পরিবর্তন এবং ইনফেকশন হয়, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। কেননা শরীরের রক্তের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা যদি বেশি বা কম হয়, দুটোই কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তবে রক্তে এই ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা যদি অতিরিক্ত হয়,আবার কম  তাহলে কিডনির কার্যকারিতা কমে যাবে। এছাড়াও আমাদের মধ্যে যাদের মাত্র একটি কিডনি রয়েছে, তাদের জন্য রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ১.৮ মিলিগ্রাম পর্যন্ত স্বাভাবিক ভাবে হয়ে থাকে।

কিডনি রোগী ভালো হয়? 

উপরে আলোচনা করেছি, আমাদের কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকার জন্য, রক্তের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কত থাকবে। এখন জানবো কিডনি রোগ কি আসলে ভালো হয় কি না। এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের মতামত হলো, কিডনিতে একবার সমস্যা দেখা দিলে, সম্পূর্ণরূপে এটা ভালো করা সম্ভব নয়। কিডনি রোগের চিকিৎসা হলো একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা, সবার জন্য এই চিকিৎসা সম্ভব হয় না। কিন্তু যদি, কিডনির সমস্যা প্রথম অবস্থায় ধরা পড়ে, চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার মান নিয়ন্ত্রণ করে সুস্থ থাকা সম্ভব।

সাধারনত কিডনি সমস্যা, অনেক বেশি হওয়ার আগে শরীরে তেমন কোন উপসর্গ দেখা দেয় না। এক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের, বছরে ১ থেকে ২ বার কিডনি টেস্ট করে দেখা প্রয়োজন, যাতে করে বোঝা যায়, কিডনি ভালো আছে কিনা এবং রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কত।

আরো পড়ুনঃ কিডনির সমস্যা হলে কি খাওয়া উচিত? এবং কি খাওয়া উচিত না।

কিডনি সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখবেন যেভাবে।  

উপরে আমরা জেনেছি কিভাবে বুজবেন আপনার কিডনিতে কোন প্রকার সমস্যা হয়েছে কিনা। এছারাও আর জেনেছি কিডনি টেস্ট করার পর, রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কত হলে কিডনির স্বাস্থ ভাল।তাহলে চলুন এবার আমরা যানি, কিভাবে আমরা কিডনির সমস্যাকে নিয়ন্ত্রনে রাখব। কিডনির সমস্যা নিয়ন্ত্রনে রাখতে হলে,আমাদের কিডনির জন্য স্বাস্থকর এমন দৈনিন্দীনের জীবনযাত্রার মান নিয়ন্ত্রন করতে হবে। 

  • শরীরের সকল ধরনের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে হবে, সেইটা হোক উচ্চ রক্তচাপ/ হাই প্রেশার কিংবা নিন্ম রক্তচাপ/ লো প্রেশার। কেননা প্রেসারে সমস্যা আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি করে তার মধ্যে কিডনিও অন্যতম। 
  • স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে হবে, শরীরের ওজনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, ওজন ভারী হলে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। 
  • ধূমপান আমাদের শরীরের কিডনির জন্য ক্ষতিকর, কিডনির স্বাস্থ্যও ভালো রাখা শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য, আমাদের ধূমপান ত্যাগ করা উচিত। তাছাড়া ধূমপান স্বাস্থ্য ও শরীরের  জন্য ক্ষতিকর, ডেকে আনতে পারে মৃত্যুও।
  • দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকায় কিছু খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে, এগুলোর মধ্যে কিছু ফল এবং কিছু সবজিও রয়েছে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণ, চর্বিযুক্ত খাবার এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 
  • সবচেয়ে বড় কথা যেটা আমাদের সবার পক্ষে সম্ভব হয় না, সেটা হল বছরে দুই একবার আমাদেরকে কিডনি টেস্ট করা উচিত। আমাদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য রয়েছে, তারা অবশ্যই বছরের দুই একবার কিডনি টেস্ট করাবেন। 

শেষ কথা। কিডনির সমস্যা কি ভালো হয়?

কিডনি সমস্যা কি ভালো হয়, এই টপিকের বেশ কিছু তথ্য আমরা জানতে পেরেছি। আমাদের কিডনিতে সমস্যা হলে সাধারণত ৭০ থেকে ৮০% কর্ম ক্ষমতা নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত বোঝা যায় না। কিডনি রোগের চিকিৎসা সাধারণত খুবই ব্যায়বহুল হয়ে থাকে, যেটা আমাদের সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই অবশ্যই আমাদের সকলের কিডনি জন্য স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন মেনে চলা উচিত। এবং যাদের সামর্থ্য আছে তারা অবশ্যই, রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা টেস্ট করে নিবেন। কেননা আপনার সুস্বাস্থ্য আপনার নিজেকেই বজায় রাখতে হবে।

মাথায় রাখবেন একটা সুস্থ শরীর কেবলমাত্র, সুন্দর একটি জীবন গঠনে ভূমিকা রেখে। এতক্ষণ মনোযোগ সহকারে আজকের এই কিডনি রোগ কি ভাল হয়, আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলটি যদি, আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। 

                               ( খোদা হাফেজ )


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url