ফারাক্কা বাধ কোথায় অবস্থিত? বাংলাদেশের জন্য ফারাক্কা বাধের প্রভাব।

ফারাক্কা বাঁধ হল বাংলাদেশের জন্য খুবই ক্ষতিকারক একটি বাঁধ। এটি কোথায় অবস্থিত, বাংলাদেশ থেকে দূরত্ব কতটুকু এবং আমাদের দেশের জন্য ফারাক্কা বাঁধের প্রভাব কেমন। এগুলো আজকের এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে যাচ্ছি।

pharakka

 তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেয়া যাক। ফারাক্কা বাঁধ কোথাও অবস্থিত,এবং ফারাক্কা বাধের  জন্য বাংলাদেশের উপর কি কি নীতিবাচক প্রভাব পড়ে। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ ফারাক্কা বাধ কোথায় অবস্থিত? বাংলাদেশের জন্য ফারাক্কা বাধের প্রভাব।

ফারাক্কা বাঁধ কোথায় অবস্থিত। 

আগেই বলেছে ফারাক্কা বাদ আমাদের দেশের জন্য, খুবই ক্ষতিকর একটি বাঁধ। ফারাক্কা বাঁধটি কোথায় অবস্থিত?, আজকের আর্টিকেলটির মূল টপিক। ফারাক্কা বাঁধ  মূলত ভারতের, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গঙ্গা নদীর উপর অবস্থিত। ফারাক্কা বাঁধ তৈরির মূল উদ্দেশ্য হলো, কলকাতা সমুদ্র বন্দরটাকে সচল রাখার জন্য। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুইটি জেলাতেই অবস্থিত এই ফারাক্কা বাঁধ। এই দুইটি জেলা হল, মুর্শিদাবাদ ও মালদহ, এবং এটি ৭,৩৫০ ফুট লম্বা। 

বাংলাদেশ থেকে ফারাক্কা বাঁধের অবস্থান কত দূরে। 

ফারাক্কা বাধ চাপাইনাবাবগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। রাজশাহী বিভাগের একটি জেলা চাপাইনবাবগঞ্জ, বাংলাদেশের খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি জেলা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গঙ্গা নদীর উপর ফারাক্কা অবস্থিত তা আমরা উপরা জেনেছি। চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফারাক্কা বাধের দুরত্ব মোটামুটি ১৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম  দিকে । যদি ১৮ কিলোমিটার কে মাইলে হিসাব করা হয় তাহলে চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে এর দূরত্ব ১১ মাইল।

বাংলাদেশের জন্য ফারাক্কা বাঁধের প্রভাব। 

আমি প্রথমেই বলেছি যে, ফারাক্কা  বাধ আমাদের বাংলাদেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর একটি বাঁধ। শুধুমাত্র এই বাঁধের কারণে, আমাদের বাংলাদেশের প্রায় ৬ কোটি মানুষ প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদি ফারাক্কা বাঁধ বন্ধ থাকে তাহলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং খুলে দিলেও আরো বেশি পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এখন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, শুধুমাত্র একটি বাদ  ফারাক্কা যার কারণে আমাদের বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং সাধারন মানুষের জীবন যাপনে কি ধরনের প্রভাব পড়ে। যখন এই ফারাক্কা বাঁধ  খুলে দেওয়া হয়, তখন দেশের মানুষের কি পরিস্থিতি হয়। 

আরো পড়ুনঃ সবথেকে পুরোনো ধর্ম কি ইসলাম নাকি সনাতন?

ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশের প্রভাবঃ

ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশে যে ধরনের প্রভাব গুলো পড়ে সেগুল হল।

  • ফারাক্কা বাঁধের কারণে প্রথমত যে সমস্যাটা হয়েছে বাংলাদেশের, সেটা হল বাংলাদেশের নদী নালার পানি আগের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে। 
  • দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের মিঠা পানির সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে। সমুদ্রের নোনা পানির পরিমাণ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণে নদনদী এবং কৃষি জমিগুলোতে লবণাক্ত বেড়ে গিয়ে উর্বরতা  নষ্ট করে দিচ্ছে। 
  • ফারাক্কা বাঁধের কারণে, দেশে যে লবণাক্ততা বেড়েছে এই লবণাক্ততা আমাদের দেশের কৃষি ও মৎস্য চাষের ব্যাপক ক্ষতি করে। যেটা সরাসরি খুব বড় আকারে আমাদের দেশের অর্থতিতিকে ব্যাপকহারে ক্ষতিগ্রস্থ করে। 
  • আমাদের দেশে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে। খনিজ পদার্থের প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়েছে যা সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপরে ব্যাপক ক্ষতিকারক প্রভাব বিস্তার করে। 

ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দিলে, বাংলাদেশ  যে সকল অঞ্চলে প্রভাব পড়ে। 

ফারাক্কা বাঁধ আমাদের বাংলাদেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর এবং এই বাধের কারণে, দেশে যে ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। সেগুলো আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি। এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব, ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিলে কি পরিস্থিতি হয়।

bonyar

  • ফারাক্কা বাঁধ যখন খুলে দেয় তখন, আমাদের দেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া এবং সিরাজগঞ্জ। এই সকল এলাকাতে খুবই অল্প সময়ে অনেক পরিমাণে পানি প্রভাবিত হয়, এবং যে ধরনের ক্ষতি হয় সেগুলো হল। 
  • ফারাক্কার পানি যখন, আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রভাবিত হয় তখন, সেই সকল অঞ্চলের বন্যার প্রভাব দেখা দেয়। এবং এই সকল অঞ্চলের কোন কোন জায়গায় ব্যাপক হারে বন্যাও হয়। এই বন্যার কারণে আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 
  • ফারাক্কা বাদের পানি বাংলাদেশে প্রভাবিত হওয়ার কারণে, সেই সকল অঞ্চলগুলোর অনেক কৃষি জমি নষ্ট হয়ে যায় এবং তার সাথে অনেক ফসলাদিও নষ্ট হয়। এতে করে যেমন দেশে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় ঠিক তেমনি, মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক হরে ক্ষতিগ্রস্ত করে। 

শেষ কথা/পান্তা ভাত কোথাও অবস্থিত? এবং বাংলাদেশের ফারাক্কা বাঁধের প্রভাব।  

ফারাক্কার সম্বন্ধে আমরা উপরে অনেক তথ্য জানতে পারলাম। এটি আমাদের দেশের কোন ধরনের ক্ষতি করে। এক কথায় বলা চলে ফারাক্কা বাঁধ আমাদের জন্য আসলে একটি অভিশাপ। কেননা ফারাক্কা বাধ খুলে দিলে মানুষ পরে মহা বিপদে এবং বাধ থাকাটাও বিপদ। যখন বিহারে বন্যা দেখা দেয় এবং পানির চাপ বিপদ শিমার উপরে চলে আসে তখন পানির চাপ কমাতে খুলে দেয় ফারাক্কার গেট। এমনিতে  বাংলাদেশ-ভারতের তুলনায় অনেকাংশই ছোট একটা দেশ। এই পানির কারনেই দেখা দেয় বন্যা। 

শুধুমাত্র এই ববাধের কারনে প্রায় ৬ কটি মানুষ খতিগ্রস্থ এবং আর্থনিতির প্রভাব সমগ্র দেশে। এতক্ষণ মনযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাধ। আজকের আর্টিকেল টি যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন।

                            ( খোদা হাফেজ )

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url