কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে
আমাদের শারীরিক সুস্থতার জন্য, যেমন পর্যাপ্ত রক্তের প্রয়োজন, ঠিক তেমনি রক্তে প্লাটিলের পরিমাণও বজায় থাকা জরুরি। রক্তে প্লাটিলেটের প্রধান কাজ হল শরীরের রক্তপাত বন্ধ করা, এবং রক্তকে জামাট বাধতে সাহায্য করা। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের প্রতি মাইক্রটারে, ১,৫০,০০০ থেকে ৪,৫০,০০০ টি প্লাটিলেট থাকে। রক্ত প্লাটিলেটের পরিমাণ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হতে পারে, যেমন বয়স এবং লিঙ্গগত কারণে।
আজকের আর্টিকেল টিতে আপনাদের সাথে, আলোচনা করার চেষ্টা করব। কি খেলে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় সে সম্পর্কে। রক্তে প্লাটিলেট বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা সব থেকে বেশি পড়ে, ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষেত্রে। চলুন তাহলে আর্টিকেল টিতে জানা যাক, কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে, এই ব্যাপারটা।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে
- রক্তে প্লাটিলেটের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতা।
- শারীরিক যে সকল সমস্যায় রক্তে প্লাটিলের পরিমাণ কমে যায়।
- শরীরের সংক্রমণের কারণেঃ
- ক্যান্সারের সমস্যায়ঃ
- অস্থিমজ্জা ও অটোইমিউন রোগের কারনেঃ
- এছাড়া অন্যান্য যে সকল কারণ রয়েছেঃ
- রক্তের প্লাটিলের অভাবে শরীরে যে সকল লক্ষণ দেখা দেয়।
- প্লাটিলেটের সমস্যায় গুরুতর লক্ষণঃ
- কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে।
- পেঁপে ও পেঁপে পাতা খাওয়াঃ
- অ্যালোভেরার রসঃ
- পানি ও তরল খাবারঃ
- ডালিম ফল উপকারিঃ
- পালং শাক ও ব্রকলিঃ
- কমলা লেবুর রসঃ
- উপসংহার। কি খেলে রক্তে প্লাটিলের বাড়ে
রক্তে প্লাটিলেটের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতা।
সাধারণত শরীরের কোন স্থানে, কেটে গেলে বা রক্তনালি আঘাতপ্রাপ্ত হলে। তখন প্লাটিলেট সেই স্থানে জমা হয়ে, রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে, যার কারণে বন্ধ হয় রক্তক্ষরণ। চলুন এখন জানা যাক, রক্তে প্লাটিলেটের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা সম্পর্কে।
- প্রতিটা মানুষের শরীরে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ পর্যাপ্ত রাখাটা জরুরী। উপরে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতি মাইক্র লিটারে ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টি প্লাটিলেট থাকে। এই প্লাটিলেটের পরিমাণ যদি কমে যায়, তাহলে ছোটখাটো কোন আঘাত থেকেও বড় ধরনের রক্তপাত হতে পারে।
- প্লাটিলেটের সাধারণ কার্যকারিতা, আপনার শরীরের কোন স্থানে কেটে গেলে বা যেকোনোভাবে রক্তক্ষরণ হলে। প্লাটিলেট সেই স্থানের রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করে।শরীরের কোন স্থান কেটে গেলে, তখন প্লাটিলেট গুলো একসঙ্গে একত্রিত হয়ে একটি প্লাগ তৈরি করে যার কারণে বন্ধ হয় রক্তক্ষরণ।
- শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ সম্পূর্নরুপে চালাতে রক্তের গুরুত্ব আমরা সকলেই জানি। শরীরের সম্পূর্ণভাবে রক্ত সঞ্চালন না হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই কাজটিও প্লাটিলেট করে থাকে, শরীরের প্লাটিলেটের পর্যাপ্ত যোগান রক্ত সঞ্চালন এবং ক্ষত নিরাময়ের জন্য অনেক ভুমিকা রাখে।
শারীরিক যে সকল সমস্যায় রক্তে প্লাটিলের পরিমাণ কমে যায়।
রক্তের প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যাওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। আজকের আর্টিকেলটি কি খেলে রক্তে প্লাটিলেটের বাড়ে, এ ব্যাপারে তবে, রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যাওয়ার, সমস্যাগুলো আমাদের জানা প্রয়োজন। চলুন এখন তাহলে এক নজরে জানা যাক, যে সকল শারীরিক সমস্যার ফলে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমান কমে যায় এগুলো সম্পর্কে।
শরীরের সংক্রমণের কারণেঃ
শরীরে ভাইরাস সংক্রান্ত অসুস্থতা রক্তে প্লাটিলেটের উৎপাদন কমাতে খুবই বড় ভুমিকা রাখে। শরীরের ভাইরাস সংক্রান্ত সংক্রমণ দেখা দিলে, এটা সরাসরি অস্থিমজ্জায় আক্রমণ করে, যার কারণে কমে যায় প্লাটিলাটির উৎপাদন। শরীরের সাধারণত ডেঙ্গু, কোভিড ১৯ এবং হেপাটাইসিসের মত ভাইরাসের কারণে, রক্তে প্লাটিলের পরিমাণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হ্রাস পায়।
ক্যান্সারের সমস্যায়ঃ
মানব শরীরে ক্যান্সারের মত সমস্যা দেখা দিলে রক্তে প্লাটিলেট কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো এর চিকিৎসা। ক্যান্সারের সমস্যা হলে, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি প্রয়োজন পড়ে। কেমোথেরাপি ও রেডিও থেরাপি নিলে অস্থিমজ্জার কার্যকারিতা কমে যেতে থাকে। এছাড়াও ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি এবং এবং কিছু ক্যান্সার রয়েছে যেমন লিউকেমিয়া, রক্তে প্লাটিলের উৎপাদন অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়। যার কারনে দেখা দেয় রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার মত প্রবণতা।
অস্থিমজ্জা ও অটোইমিউন রোগের কারনেঃ
সাধারণত মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, অনেক সময় নিজেই প্লাটিলেটকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে দেয়। শরীরে অটোইমিউন রোগ দেখা দিলে, এ সময় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে, যার ফলে দেখা দেয়, গ্রম্বোসাইটোপেনিয়া মত শারীরিক সমস্যা।
অনেক সময় অস্থিমজ্জা পর্যাপ্ত পরিমাণে প্লাটিলেট তৈরি করতে পারে না, এই সমস্যাটা বেশি দেখা দেয়, অ্যানিমিয়া বা কিছু ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। শরীরের এই ধরনের সমস্যা হলে, যথেষ্ট পরিমাণে প্লাটিলের তৈরি হয় না এবং প্ল্যাটিলেটের প্লেটগুলো ধ্বংস হয়ে যায়।
এছাড়া অন্যান্য যে সকল কারণ রয়েছেঃ
শরীরে কোন রাসায়নিক বিষক্রিয়ার, সংস্পর্শে এসে কোন সমস্যা দেখা দিলে, রক্তে প্লাটিলেট কমে যেতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত মদ্যপান এবং কিছু ওষুধ রক্তে প্লাটিলেটের মাত্র কমাতে পারে। শারীরিক সুস্থতায় ওষুধের মধ্যে, নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলো রক্তপাতের মাত্র কমায়। মদ্পান আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে। এই সকল সমস্যা, অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত।
আরো পড়ুনঃ কি খেলে ডায়েবেটিস দ্রুত কমে,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার উপায়।
রক্তের প্লাটিলের অভাবে শরীরে যে সকল লক্ষণ দেখা দেয়।
আমাদের শরীরের রক্তে, প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, এগুলো আমাদের জানা প্রয়োজন। সাধারণত রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ এক লক্ষ পঞ্চা হাজার থেকে চার লক্ষ পঞ্চা হাজার টি, একটা পুরনোবস্ক শরীরের জন্য প্রযোজ্য। শরীরে যদি এই প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যায়, এবং রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্লাটিলেট উৎপন্ন না হয়, তাহলে যে সকল লক্ষণ দেখা দিবে, চলন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নি।
- শরীরের কোন স্থানে সামান্য পরিমাণে কেটে গেলে, রক্তপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি হয়। কেননা সে সময় ঠিকঠাক রক্তে প্লাটিলেট একত্রিত হয়ে জমাট বাঁধতে, কাজ করে না। যেকোনো কাটা জায়গার রক্ত জমা বেঁধে রক্ত বন্ধ করার জন্য, প্লাটিলেটের পরিমাণ পর্যাপ্ত থাকা জরুরী।
- সাধারণত রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেলে, ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ হয়ে বেগুনি বা লালচে বর্নের দাগ দেখা যেতে পারে। এছাড়া অনেক সময় ত্বকে, এক ধরনের ছোট খুদ্র লাল দাগ, দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- অনেক সময় দাঁতের মাড়ি ভা নাক থেকে, যদি অযথা রক্তপাত হয়, কোন কারণ ছাড়াই। তাহলে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ, কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
- রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা কমে গেলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেওয়া, সাধারণ একটি কারণ। কেননা শারীরিক সুস্থতায় রক্তের প্লাটিলেটের পরিমাণ বজায় থাকা জরুরী। অনেক সময় অনেকের মল ও প্রস্রাব এর সঙ্গেও, রক্ত বের হতে পারে। কেননা শরীরের রক্তের নিয়ন্ত্রণ প্লাটিলেট করে থাকে। এজন্য অবশ্যই শরীরে রক্তে প্লাটিলের মাত্রা পর্যাপ্ত রাখা জরুরী।
- নারীদের ক্ষেত্রে এই সকল সমস্যার সাথে, পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া সম্ভাবনা অনেকাংসে বাড়ে যেতে পারে। কেননা প্লাটিলেটের মাত্রা নারীদের কমে গেলে, পিরিয়ডের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে রক্তপাত হয়।
প্লাটিলেটের সমস্যায় গুরুতর লক্ষণঃ
উপরে প্লাটিলেটের সমস্যায় সাধারণ লক্ষণ, বা প্রাথমিক লক্ষণগুলো বলা হয়েছে। রক্তের প্লাটিলেটের অভাব, তীব্র আকার ধারণ করলে, মানুষের মস্তিষ্কেও রক্তক্ষরণ হতে পারে। এ সময় তীব্র মাথাব্যথা, এবং চোখে ঝাপসা দেখার মতন সমস্যা সৃষ্টি হয়। কাশি দিলে কাশির সাথে রক্ত বের হয়ে থাকে, তাছাড়াও কোন কোন সময় বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব হতে পারে, রক্তের প্লাটলেটের অভাব দেখা দিলে।
আপনি যদি কোন সময় এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন, এবং কোন লক্ষণ আপনার শরীরে দেখা দেয়। তাহলে কোন মতেই অবহেলা করবেন না দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কেননা রক্তে প্লাটিলাটে পরিমাণ কমে গেলে, এটি থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়ার মত গুরুতর কোন রোগের লক্ষণও হতে পারে। যাইহোক আমাদের শারীরিক সুস্থতায় রক্তে, পর্যাপ্ত প্লাটিলেটের গুরুত্ব এখন বুঝতেই পারছেন।
কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে।
কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে? আজকের আর্টিকেলটির মূল বিষয়। এই আর্টিকেল টিতে উপরে আমরা, রক্তে প্লাটিলেটের গুরুত্ব, রক্তে প্লাটিলেট কমে যাওয়ার কারণ এবং প্লাটিলেট কমে গেলে যে সকল লক্ষণ দেখা দেয় সেগুলো সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের হয়তো কারোই বুঝতে বাকি নেই, রক্তে প্লাটিলের পরিমাণ সঠিকভাবে বজায় রাখা কতটা জরুরি।
রক্তে প্লাটিলেটের পরিমান বজায় রাখতে, এমন বেশ কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো দৈনন্দিন এর খাদ্য তালিকায় রাখলে, পর্যাপ্ত পরিমাণ প্লাটিলেটের যোগান দেওয়া সম্ভব। চলুন কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে, এই আর্টিকেল টিতে, কি খেলে প্লাটিলেট বাড়ে এ ব্যাপারে জানা যাক।
পেঁপে ও পেঁপে পাতা খাওয়াঃ
পেঁপে এবং পেঁপে পাতা খেলে শরীরের রক্তে প্লাটিলের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা যায়, পেঁপে পাতার নির্যাস গ্রহণকারী রোগীদের, জিনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, যা শরীরের মেগাক্যারিওসাইট এবং রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও পেপেতে থাকা যে সকল ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, এগুলো রক্তে প্লাটিলেটেরই পরিমাণ বাড়াতে কাজ করে।
রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে পেঁপে সরাসরি, না খেয়ে এর জুস করে খাওয়া সব থেকে উত্তম। শুধু পেঁপেই নয়, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ও ভিটামিন ই এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার সুস্থ রক্ত কণিকা তৈরিতে, বেশ ভূমিকা পালন করে। এই সকল ধরনের খাবার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ে, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
অ্যালোভেরার রসঃ
অ্যালোভেরা রস প্লাটিলেট বাড়াতে ভুমিকা রাখে, বিশেষ করে টাইফয়েড বা ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষেত্রে, নিয়মিত এলোভেরা রস খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কেননা এলোভেরার রসে রক্ত পরিষ্কার করার মতো এবং জীবাণু সংক্রমণ রোধ করার ক্ষমতা রয়েছে। তবে অ্যালোভেরা রসের প্রতিকার এবং কার্যকারিতা ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কমলার উপকারিতা ও পুষ্টিগুন সম্পর্কে জানুন।
কিছু গবেষকরা গবেষণায় পেয়েছে যে অ্যালোভেরার নির্যাস অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং, এলোভেরা রস রক্তের প্লাটিলেটের মাত্রা বাড়াতে সামগ্রিকভাবে খুব বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
পানি ও তরল খাবারঃ
সাধারণত পানি ও তরল খাবার রক্তে সরাসরি প্লাটিলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে না। তবে পানি ও তরল খাবার আমাদের শরীরকে হাইড্রেট রাখতে ও প্রদাহ কমাতে ভূমিকা রাখে যা প্লাটিলেট বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষেত্রে পানি শূন্যতা দেখা দিলে, ডাবের পানি ফলের রস এবং অন্যান্য তরল পান করা জরুরী। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পানি শূন্যতা দূর করে। চাইলে আদা বা তুলসী পাতা দিয়ে ভেসজ চা তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে।
ডালিম ফল উপকারিঃ
ডালিম ফল সরাসরি রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে ভূমিকা পালন করে। কেননা ডালিমের মধ্যে থাকা আয়রন রক্তে নতুন রক্ত কণিকা তৈরিতে সাহায্য করে, যা প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাধারণত শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে, শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। ডালিম শরীরের এই দুর্বলতা দূর করতেও ভূমিকা পালন করে।
পালং শাক ও ব্রকলিঃ
বিভিন্ন প্রকার সবুজ শাকসবজি রক্তে প্লাটিলের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে ভূমিকা পালন করে।এই সব শাকগুলোর মধ্যে, পালং শাক ও ব্রকলি অন্যতম। এই সবুজ শাকে থাকা আয়রন ও ওমেগা থ্রি ফেটি অ্যাসিড রক্তে প্লাটিলেট বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। প্লাটিলেটের জন্য চাইলে মিষ্টি কুমড়া ও খাওয়া যেতে পারে। অন্যান্য খাবার যেমন মসুর ডাল, তোফু, বিন ও আপেল ইত্যাদি প্লাটিলেটের জন্য উপকারি হতে পারে।
কমলা লেবুর রসঃ
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল রক্তে প্লাটিলেট বৃদ্ধি করার জন্য, ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষেত্রে খুবই বড় ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে কমলায় ভিটামিন সি রয়েছে, এবং এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ডেঙ্গু প্রতিরোধেও সাহায্য করে। এছাড়াও দৈনন্দিনীর খাদ্য তালিকায় যে লেবু খেয়ে থাকি আমরা, সেই লেবুর রসে, ভিটামিন সি পাওয়া যায়। পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে, লেবু শরবত খেলেও, এটি রক্তের প্লাটিলের ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং, নতুন রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
উপসংহার। কি খেলে রক্তে প্লাটিলের বাড়ে
কি খেলে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ে? এই আর্টিকেল টিতে রক্তের প্লাটিলেট সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য ইতি মধ্যেই তুলে ধরা হয়েছে। আপনার যদি কখনো মনে হয়, রক্তে প্লাটিয়েটের মাত্রা কমে যাচ্ছে, তাহলে এই সকল খাবারের পাশাপাশি,অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসার মধ্যে,এমন কিছু চিকিৎসা রয়েছে যার মাধ্যমে রক্তে প্লাটিলট প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। মানব শরীরের জন্য রক্তের প্লেটিলেটের মাত্রা বজায় রাখা কতটা, গুরুত্বপূর্ণ তা হয়তো আপনি এখন বুঝতে পারছেন।
আমাদের দেশে ডেঙ্গু জ্বর, প্রতিবছরই কম বেশি মানুষের আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে রক্তের প্লাটিলেটের পরিমান, বাড়ানোর নিয়মকানুন মানা, অত্যন্ত জরুরী। যাইহোক আপনার বা , পরিবারের কারো, রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেলে, এ ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন।
(খোদা হাফেজ)



 
 
 
 
ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url