মানুষের মৌলিক চাহিদা কয়টি ও কি কি
আমরা মানুষ, তবে আমাদের চাহিদার তো আর কোন শেষ নেই। এই সকল চাহিদার মধ্যে,
সামাজীক জীব,হিসাবে সমাজে ,জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, বেচে থাকার যে সময়টা। এই
সময়টার মধ্যে,আমাদের জীবনে যে চাহিদা গুলো না হলে, বেচে থাকা অসম্বব, সেই চাহিদা
গুলকেই বলে মৌলিক চাহিদা। এখন প্রশ্নটা হল মানুষের এই মৌলিক চাহিদা গুলো কয়টি ও
কি কি? মানুষের মৌলিক চাহিদা সাধারনত ৫টি ,এগুলো হল { খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান,
শিক্ষা ও চিকিৎসা }
আজকের আর্টিকেল টিতে আপনাদের সাথে মানুষের মৌলিক চাহিদা গুলো নিয়ে আলচনা করার
চেষ্টা করব। আমাদের বেচে থাকার জন্য, যে সকল চাহিদা গুলো না হলে, বেচে থাকা কঠিন,
সেগুল সম্পর্কে যানা আমাদের অত্যান্ত প্রযনীয়। কথা না বাড়িয়ে চলুন থাহলে, মানুষ
অর্থাৎ আমাদের মোলিক চাহিদা গুলো কেন প্রয়জন, সে ব্যাপারে বিস্তারিত যানা
যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মানুষের মৌলিক চাহিদা কয়টি ও কি কি
বেচে থাকার জন্য মৌলিক চাহিদার গুরুত্ব।
মহান সৃষ্টি কর্তা,যিনি এই সমগ্র প্রিথীবি সৃষ্টি করেছেন ,তিনি আমাদেকে সামাজিক
জীব হিসাবে পৃথীবিতে পাঠিয়েছেন। সমাজে সকলের সাথে,সামাজীক নিয়ম ও রিতি মেনে
আমাদেরকে, বসবাস করতে হয়। আজকের আর্টিকেল টিতে উপরে আমরা জেনেছিলাম, আমাদের
মৌলিক চাহিদা পাঁচটি।
এগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে খাদ্যঃ
আমাদের জন্মের শুরু থেকেই খাদ্যের প্রয়োজন হয়। জন্মের শুরু থেকে আমাদের, মায়ের
বুকের দুধ হয়, বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের প্রধান এবং প্রথম উৎসব। খাদ্য ছাড়া
বেঁচে থাকা আমাদের কোনমতেই সম্ভব নয়। আপনার আমার সকলেরই, বিশেষ করে আমাদের
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে। শারীরিক সুস্থতা এবং শরীরের শক্তি যোগান দেওয়ার জন্য,
তিন বেলা খাবার খাওয়ার রীতি রয়েছে। অনেক সময়, এক বেলা না খেয়ে থাকলেই বোঝা
যায় খাদ্য ছাড়া বেঁচে থাকা আসলে কতটা কঠিন।
তবে বর্তমান সময় মানুষের এমন পরিস্থিতি এসে দাঁড়িয়েছে, মানুষের মৌলিক চাহিদার
মধ্যে। প্রথম চাহিদা খাদ্যের যোগান দেওয়ার জন্য, বিভিন্ন ধরনের পন্থা অবলম্বন
করে। কেউবা ভালো থাকার জন্য, ভালো খাওয়ার জন্য, আরো সমাজের ১০,২০ জন মানুষের
ক্ষতি করে। খাদ্যে ভেজাল দেয়, বাজার সিন্ডিকেট করে ইত্যাদি নানা ধরনের দুর্নীতি
অবলম্বন করে। এক কথায় সামাজিক মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের জন্য, অসামাজিক কার্যকলাপ
অবলম্বন করে।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বস্ত্রঃ
আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে, একটা সময় বস্ত্র সামাজিকতা রক্ষার্থে
গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তবে বস্ত্র আমাদের, শারীরিক তাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য যেমন,
ঠান্ডা গরম রোদ বৃষ্টি এবং বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের কামড় থেকে মুক্তির জন্য,
জন্মের শুরু থেকেই প্রয়োজন পড়ে। আমাদের সামাজিক ও মৌলিক চাহিদার মধ্যে, বস্ত্র
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বস্ত্র আমাদের শরীরকে সুরক্ষা দেয় এবং বিভিন্ন ধরনের
সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে।
আমাদের সমাজের সামাজিক প্রেক্ষাপটে, বস্ত্র সামাজিক ও ব্যক্তিত্বের পরিচয় এর
একটা মাধ্যমও। বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সামাজিক অনুষ্ঠান, ইত্যাদি সকল
ক্ষেত্রেই আমাদের বস্ত্রের প্রয়োজন। সর্বোপরি বস্ত্রের ক্ষেত্রে বলা যায়,
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সুস্থ ও সামাজিক ও ব্যক্তিগত পরিচয়ের, অন্যতম মাধ্যম
হিসেবে বস্ত্র বিবেচিত।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাসস্থানঃ
সুস্থ সুন্দর এবং নিরাপদ জীবন যাপনের জন্য, বাসস্থান আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজন।
আমাদের প্রত্যেকেরই, থাকার জন্য নিরাপদ একটি বাসস্থান রয়েছে। বাসস্থান ছাড়া
আমাদের জীবনকে, সুস্থ সুন্দর ও সামাজিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। আমাদের জীবন
ধারণের জন্য, বাসস্থান কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা উপলব্ধি করলেই বুঝতে পারি। এই
বাসস্থানের ক্ষেত্রেও সামাজিকতায় রয়েছে ভেদাভেদ, কেউ থাকে পাঁচ তলায়, আবার কেউ
থাকে গাছ তলায়।
যাইহোক যে যেখানেই থাকুক না কেন, তাতে কোন সমস্যা নাই, তবে আমরা যে মানুষ
শুধুমাত্র এটাই উপলব্ধি করলে চলবে। কিন্তু অনেকে, তাদের অর্থ ও প্রতিপত্তির
কারণে, গরিব এবং নিচু শ্রেণীর মানুষদের মানুষই মনে করে না। এদের তালিকা আমাদের
সমাজের শিক্ষিত ব্যক্তিরাও রয়েছে। যাইহোক সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সঠিক এবং সামাজিক
জ্ঞান অর্জনের তৌফিক দিক।
চতুর্থ স্থানে শিক্ষাঃ
মানুষ হতে হলে আমাদের শিক্ষিত হতে হবে। আমরা মানুষ কেন, এটা আমাদেরকে উপলব্ধি করা
সকলেরই উচিত। মানুষ হতে হলে সুশিক্ষার প্রয়োজন, সুশিক্ষা ছাড়া আপনি কোনদিনও
সামাজিক এবং পরিপূর্ণ একজন মানুষ হতে পারবেন না। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য, যে সকল
অধিকারের প্রয়োজন, এগুলো উপলব্ধি করার জন্য হলেও। আমাদের সকলেরই সুশিক্ষায়
শিক্ষিত হওয়াটা জরুরী। আমাদের শিক্ষিত হওয়াটা অত্যন্ত জরুরী, কেননা শিক্ষা
আমাদেরকে জ্ঞান অর্জন, দক্ষতা ও মূল্যবোধ দিয়ে তৈরি করে।
সামাজিক ও ব্যক্তিগত বিকাশে, সামাজিক চিন্তাভাবনা, উন্নত ও সুন্দর কর্মজীবনের
জন্য, সামাজিক ভেদাভেদ ভুলে সঠিক জীবন যাপনে শিক্ষা অত্যন্ত জরুরী। শিক্ষা আমাদের
মানুষ থেকে, সামাজিক, সঠিক ও সৎ মানুষ হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানেও
দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে, তো অনেক শিক্ষিত মানুষই, পশুর মতন জীবনযাপনে উদ্ভাবিত
হয়। হাজার জনের ক্ষতি করে, একা ভালো থাকার জন্য শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে, সম্পদের
পাহাড় তৈরি করে।
পঞ্চম স্থানে রয়েছে চিকিৎসাঃ
অসুস্থতায় ভোগে নাই এমন মানুষ, এক কথায় বলা যায় পাওয়াই মুশকিল। অসুস্থ হলেই
আমরা বুঝতে পারি, সঠিক চিকিৎসাটা আমাদের জন্য আসলে কতটা জরুরী। মানুষের মৌলিক
চাহিদার মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে চিকিৎসা। চিকিৎসা আমাদের, রোগ প্রতিরোধ, রোগ
নিরাময় এবং স্বাস্থ্যগত উন্নতির জন্য প্রয়োজন। চিকিৎস্য ও আমাদের জন্ম শুরু
থেকেই প্রয়োজন পড়ে, চিকিৎসা আমাদের শরীরের অনেক বড় আঘাত সরাতে পারে। অনেক
ক্ষেত্রে জীবন রক্ষায় চিকিৎসার গুরুত্ব, আকাশ ছোঁয়া হয়ে যায়।
যদিও জীবন রক্ষার মালিক একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, চিকিৎসা শুধুমাত্র উসিলা, তবুও
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের মধ্যে যারা, মানুষকে চিকিৎসার সুবিধা দিয়ে
থাকি। তাদের স্থান সমাজের, অনেক উপরে সম্মানের জায়গায়। কেননা, পারিবারিক
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে, বিভিন্ন ধরনের শারীরিক, মানসিক ও গুরুতর অসুখের
ক্ষেত্রে, চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা আমরা হারে হারে টের পাই।
মানুষের মৌলিক চাহিদা কয়টি ও কি কি? এ ব্যাপারে আরো কিছু তথ্য
আমরা মানুষ, মানুষ সামাজিক জীব তা আমরা সকলেই জানি। সমাজের সকলের সাথে
মিলেমিশে বসবাস করা, মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে সহযোগিতা করা, আমাদের সকলেরই
দায়িত্ব। তবে আমরা, মানুষই মানুষের ক্ষতি করি, যেটা মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো
পূরণে বাধা প্রদান করে। আমাদের শিক্ষিত হওয়ার থেকেও, একজন সৎ এবং ভালো মানুষ
হওয়াটা জরুরি। আমরা নিজেরা যদি নিজেদেরকে সঠিক মানুষই তৈরি, না করতে পারি, তাহলে
সামাজিকভাবে জীবন যাপন করাটা সকলের পক্ষেই অসম্ভব। আমাদের প্রত্যেকেরই সমাজের
পরিস্থিতিতে, খেয়াল করলেই দেখতে পাই, অন্যায় অবিচার, অত্যাচারে পরিপূর্ণ।
যেগুলো আমাদের সামাজিকতার সাথে সম্পন্নরূপে বেমানান। বেঁচে থাকার জন্য, মৌলিক
চাহিদার প্রত্যেকটাই আমাদের প্রয়োজন। এদের মধ্যে বিশেষ করে সামাজিকভাবে বেঁচে
থাকার জন্য, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়াটা, আমাদের সকলেরই প্রয়োজন। একটি সুন্দর
সমাজ গঠনের জন্য, শিক্ষিত হয়াটা যেমন প্রয়োজন, ঠিক তেমনি সুশিক্ষিত ও
সামাজিক মানুষ হয়াটাও প্রয়োজন। মানুষের জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলোকে, সামাজিক জীবন
যাপনের ক্ষেত্রে অধিকারও বলা যেতে পারে।
শেষ কথা। মানুষের মৌলিক চাহিদা কয়টি ও কি কি?
মানুষের মৌলিক চাহিদা কয়টি ও কি কি? এ ব্যাপারে আমরা বেশ কিছু তথ্য জানতে
পেরেছি, ইতিমধ্যেই। এর সঙ্গে আরও, বর্তমানে সমাজের পরিস্থিতিও জানতে পেরেছি। আমরা
যে যাই করি না কেন, ক্ষনিকের এই জীবনে, বেঁচে থাকার জন্য মৌলিক চাহিদা গুলো
আমাদের যেমন প্রয়োজন। ঠিক তেমনি সামাজিক মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকা আমাদের অত্যন্ত
প্রয়োজনীয়। কেননা মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে, সুন্দর সমাজ গঠনে, শিক্ষার
ভূমিকা অপরিহার্য, তবে সেটা সুশিক্ষা হতে হবে।
সবশেষে, আমাদের সকলের মৌলিক চাহিদা গুলো সুন্দরভাবে পূরণের জন্য। সকলেরই ভালো এবং
সুস্থ থাকাটা জরুরী। আপনি আমি সকলেই ভাল থাকলে, ভালো থাকবে আমাদের সমাজ, ভালো
থাকবে দেশ, শান্তিতে থাকবে সকলেই। এক্ষেত্রে সকলে সকলের মৌলিক অধিকার গুলো পূরণের
জন্য সহযোগিতা করতে হবে।
এতক্ষন, মানুষের মৌলিক চাহিদা গুলো কি কি? এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য
ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই
বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন।
( খোদা হাফেজ )
ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url