অজু করার সঠিক নিয়ম জেনে নেই।

 প্রিয় পাঠক, আমরা মুসলিম এবং মুসলিম হিসেবে আমাদের শরীরের পবিত্রতার ব্যাপারে সব সময় সতর্ক থাকা উচিত। আমাদের শরীর পবিত্র রাখার সবথেকে উত্তম উপায় হচ্ছে ওযু করা। শুধু পবিত্র শরীরের জন্য অজু করতে হবে ব্যাপারটা এমন নয়। আমাদের পবিত্র কিতাব আল কোরআন এবং নামাজ পড়ার জন্য অবশ্যই অজু করে পবিত্র হয়ে নিতে হবে। 


অজু আমরা কেন করব । 

আমরা মুসলিম হিসাবে,  কোরআন পড়া এবং নামাজ পড়া আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক। তাই পবিত্রতার জন্য ওযু করা আমাদের অত্যন্ত জরুরি এবং বাধ্যতামূলক।এছাড়াও আমাদের সব সময় শরীরকে পবিত্র রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পবিত্রতার বিষয় আমাদের এতটাই সতর্ক করা হয়েছে যে কোন প্রকার প্রস্রাব,  ও টয়লেট যদি আমরা করি। তাহলেও ওযু করা আমাদের জন্য বাধ্যতামুলক। তাই আমাদের সকলেরই উচিত ওযু করার সঠিক নিয়ম জেনে রাখা। আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন ওযু করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। 

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন,' হে বিশ্বাসীগণ ' যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও তখন তোমাদের মুখ হাত কনুই পর্যন্ত ধোবে।যদি তোমরা অপবিত্র থাকো তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। যদি তোমরা অসুস্থ থাকো বা সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আস কিংবা স্ত্রীর সাথে সঙ্গত হও, আর পানি যদি না পাও, তবে তাইআম্মুম করবে। পরিষ্কার মাটি নিয়ে এবং তা মুখে ও হাতে বুলিয়ে নেবে। আল্লাহ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না এবং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের উপর তার অনুগ্রহ সম্পন্ন করতে চান। যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জানাতে পারো। ( সূরা মায়িদা,আয়াত:৬) 

শরীর অপবিত্র হওয়ার কারণ। 

শরির অপবিত্র হওয়ার অনেক কারন রয়েছে ।  প্রসাব -পায়খানা আমাদের নিত্য দিনের সংগি। দিনে একাধিক বার আমরা প্রসাব পায়খানা করে থাকি। তবে এটা জানা আমাদের আত্যন্ত জরুরি যে প্রসাব পায়খানা করলে, শরির নাপাখ হয়ে যায়। সহবাস করলে নাপাক হয়ে যায় শরির ,তবে সহবাস করলে অবস্যই ফরজ গোসল করতে হবে। অচেতন হলে ও মানুষের শরির নাপাক হয়ে যায়। অচেতন কথার মানে হল অঞ্জান হয়ে যাওয়া বা ঘুমিয়ে পরা । আনেক সময় যে কোন কারনে আমাদের শরির থেকে রক্ত বের হয়। আমাদের জানা উচিত রক্ত বের হলে শরির থেকে ,আমাদের শরির তখন নাপাক হয়ে যায়। 

আমরা যেহেতু মুসলিম আমাদের সকলের উচিত ,নাপাক শরির কে অজুর মাধ্যমে পবিত্র করা। চলুন শুরু করা যাক অজু করার নিয়মাবলি।

অজু কত প্রকার ও কি কি। 

ইতিমধ্যেই আমরা জেনেছি যে, আমাদের শরীরের পবিত্রতার জন্য ওযু করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে এ অজুর কিছু প্রকারভেদ রয়েছে। অজু তিন প্রকার যেমন, ফরজ,ওয়াজিব এবং মুস্তাহাব।পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং নামাজ পড়ার জন্য আমরা যে অজুটা করি সেটা হল ফরজ অজু। আমাদের মধ্যে অনেকেই পবিত্র মক্কায় হজ পালন করতে যায়, তখন পবিত্র কাবা শরীফ তাওয়াফ করতে হয়, এবং কাবা শরীফ তাওয়াফ করার জন্য, যে অজুটা করতে হয় সেটা হল ওয়াজিব অজু। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী গোসল করা এবং ঘুমানোর আগে ওযু করা উচিত পবিত্রতার জন্য। গোসল করা এবং ঘুমানোর জন্য আমরা যে অজুটা করি সেটা হলো মুস্তাহাব।

অজু করার নিয়ম।

ওজু আমাদের শরির প্রবিত্রতার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয়। তাই আমাদের অজু করার সঠিক নিয়ম যানা অত্যান্ত জরুরি ও প্রয়জনিও। তাই ওজু করার সঠিক নিয়ম জানতে আমাদের পোস্ট তি মনযোগ সহকারে পড়ুন।

প্রথমে বিসমিল্লা সহকারে অজুর নিয়ত করতে হবে । তার পর পানি দিয়ে প্রথম ডান হাতের কবজি পর্যন্ত তিনবার, এবং বাম হাতের কবজি পর্যন্ত ও তিনবার ভাল করে ধুতে হবে। এমনকি আঙ্গুলের ফাঁকে ও আংটির ফাকেও পানি প্রবেশ করে। হাতের তালুতে পানি নিয়ে তিনবার মুখে গড়গড়া করতে হবে এবং তার সঙ্গে কুলিও করতে হবে। তারপর ডান হাতে পানি নিয়ে নাকের ছিদ্র পানি প্রবেশ করাতে হবে এবং বা হাতের আঙ্গুল দিয়ে নাক পরিষ্কার করতে হবে তিনবার। এরপর দুই হাতে পানি নিয়ে সুন্দরভাবে মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলতে হবে। পরে বা হাতে পানি নিয়ে ডান হাতের কনুই পর্যন্ত এবং ডান হাতে পানি নিয়ে বাঁ হাতের কোন পর্যন্ত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। 

এরপর হাতে হালকা করে পানি নিয়ে দুই হাত দিয়ে মাথার উপরের দিক থেকে পেছনে এবং পেছন থেকে সামনে মাসেহ বা মোছার কাজ করতে হবে।  এ সময় মনে মনে কালেমা শাহাদাত ও পড়া যেতে পারে। তৎপর দুই কানের তর্জনী প্রবেশ করিয়ে এবং কানের পেছনে বৃদ্ধাঙ্গুলি নিয়ে ও তা আগে পিছে করিও কানের ছিদ্র ও বাইরের অংশ মুছে পরিষ্কার করতে হবে। শেষে বাঁ হাতের তালু দিয়ে ডান পায়ের উপর নিচে ও আঙ্গুলের ফাঁকে হতে হবে একইভাবে ডান হাতের তালু দিয়ে বা পায়ের উপর নিচে আঙ্গুলের ফাঁকে সুন্দর করে ধুয়ে নিতে হবে।

ওযু আমাদের এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে কোথাও যদি অজুর পানি না পাওয়া যায় বা অসুস্থতার কারণে কেউ পানি ব্যবহারে অসুবিধা হলে বিকল্প হিসেবে শুকনো মাটি বা বালি ব্যবহার করে পরিচ্ছন্ন হওয়ার বিধান শরীয়তে দেওয়া হয়েছে। 

শেষ কথা। 

অজু সম্পর্কে আমরা এতক্ষণে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। এতটুক তো আমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছি, মুসলমান হিসেবে আমাদের নামাজ পড়া পবিত্র কুরআন পড়া অবশ্যই প্রয়োজনীয়। এক্ষেত্রে আমাদের পবিত্রতার জন্য ওযু করা অত্যন্ত জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমাদের জীবন ব্যবস্থার সাথে অতপ্রত  ভাবে জড়িত অনেক সময় দেখা যায় আমরা নামাজ পড়ি কুরআন ও পড়ি তবে শুদ্ধভাবে ওযু টা হয় না। এক্ষেত্রে আমাদের নামাজ এবং কোরআন পড়া গুনাহের কাজ হবে। কেননা আমাদের পবিত্রতার সাথে রবের প্রার্থনা করা উচিত। 

তাই আমরা সকলেই, ভালোভাবে ওজন নিয়ম শিখে নিয়াতের সাথে ওযু করব। পবিত্রতার ক্ষেত্রে আমরা সকলে সর্বদা সচেতন থাকবো। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 

                                                                                                         (খোদা হাফেজ)  







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url