বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হওয়ার কারণ, এবং কারনীয় কি?

বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হওয়ার কারণ, হতে পারে অনেক, কেননা বাচ্চাদের জ্বর নামক উপসর্গটি একটু বেশি হয়।তবে জ্বর হলে দুশ্চিন্তা করার কোন কারন নাই।  আপনি হয়তো আগে থেকেই যানেন,আবার নাও জানতে পারেন, জ্বর কোন রোগ নয় এটি অন্য রোগের উপসর্গ মাত্র। শরিরে অন্য রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই , তাপমাত্রা বেড়ে জ্বর হতে পারে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জ্বর হওয়ার প্রবণতা একটু বেশিই থাকে। 

baccader

আজকের এই আর্টিকেল টিতে আপনাদের সাথে আলচোনা করব। সাধারনত বাচ্চাদের জ্বর কেন হয় এবং জ্বর হলে করনীয় কি সেগুল সম্পর্কে । তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হওয়ার কারণ, এবং কারনীয়। আপনার যদি বাচ্চা থেকে থাকে তাহলে এই পোস্ট টি আপনার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন হতে পারে। মনযোগ সহকারে আজকের আর্টিকেল টি পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হওয়ার কারণ, এবং কারনীয় কি?

জ্বর হয়ার লক্ষণ/কিভাবে বুজবেন যে বাচ্চার জ্বর হয়েছে। 

আমাদের সকলের শরীলেই তাপমাত্রা থাকে,এই তাপমাত্রার একটি পরিমাপ থাকতে হবে। বাচ্চাদের শরিরে তাপমাত্রা থাকে সাধারনত ৯৭.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট  থেকে ৯৯.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট। আবার শরীরের কোন কোন জায়গায় তাপমাত্রা ৯৭.৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে। কেননা  শরীরের সকল জায়গা তাপমাত্রা এক রকম না, স্থান ভেদে তাপমাত্রার পরিবর্তন রয়েছে। 

আপনার বাচ্চা যদি শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যায়, তাহলে অবশ্যই একটি থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মেপে নিবেন। যদি দেখতে পান বাচ্চার শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৮° সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি তাহলে ধরে নিবেন আপনার বাচ্চার জ্বর হয়েছে। শিশু বাচ্চাদের যখন দাঁত ওঠে,  বা পোলিও টিকা দিলে জ্বর অনেক সময়ই হয়ে থাকে। তাছাড়া শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া সাথে যদি শর্দি,কাশি, বমি, ডায়রিয়া বা শ্বাসকষ্ট হলে, সম্পূর্ণভাবে ধরে নিতে পারেন যে জ্বর হয়েছে। 

বাচ্চার হঠাৎ জ্বর হওয়ার কারণ? 

আপনার বাচ্চার জ্বর হয়েছে কিনা যেভাবে বুঝবেন, উপরে তা আলোচনা করা হয়েছে। এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব, যে সকল কারণে বাচ্চাদের হঠাৎ করে জ্বর হয়। বাচ্চাদের শরীরে হঠাৎ জ্বর হওয়ার প্রধান কারণ হলো, শরীরের ভিতরে কোন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বা সংক্রমণের কারণে। এই সংক্রমণ গুলো হল নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতন রোগের লক্ষণ। 

এ সংক্রামনের কারনে অনেক সময় শিশুদের জ্বর হয়ে থাকে। যখন শিশুদের শরীরে বড় ধরনের কোন অসুখের লক্ষণ দেখা দেয়, তখন জ্বর হতে পারে। এক্ষেত্রে যদি আপনার বাচ্চার জ্বর হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই জ্বর শনাক্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। 

বাচ্চার হঠাৎ জ্বর হলে, প্রাথমিক অবস্থায় বাড়িতে করণীয়। 

আমাদের মধ্যে এমন অনেকে আছে যারা, বাচ্চার জ্বর হলে নিজেরা খুব ভেঙে পরি। তবে এটা করা উচিত নয়, জ্বর হলে অবশ্যই ঠান্ডা মাথায় এর যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। 

  • আপনার বাচ্চার যদি জ্বর হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই, বাচ্চার শরীরের পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিন। কেননা সংক্রমণের কারণে যখন শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তখন শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়াটাই হলো সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করা। 
  • আমরা অনেকেই মনে করি যে জ্বর হলে, শরীরে খুব গরম কাপড় পড়তে হয়। এটা সম্পূর্ণভাবে ভুল ধারণা, আপনার বাচ্চার যদি জ্বর হয় তাহলে অবশ্যই বাচ্চাকে হালকা এবং আরামদায়ক পোশাক পরাবেন।
  • বাচ্চার জ্বর হলে ডাবের পানি খাওয়াবেন কারন ডাবের পানি বাচ্চার শরির স্বতেজ রাখবে এবং শরীরের পানি শুন্যতা পুরন করবে।

  • বাচ্চার জ্বর হলে অবশ্যই, তরল জাতীয় খাবার খাওয়াবেন। কারণ পানি শূন্যতার রোধ করতে তরল খাবারের ভূমিকা রয়েছে। যে খাবারগুলো খাওয়াবেন সেগুলো হল, দুধ, সবজির স্যুপ, ডালের পানি এবং ভাতের মারও খাওয়াতে পারেন।
  • সবশেষে যেটা করতে পারেন সেটা হল, হালকা উষ্ণ গরম পানি দিয়ে বাচ্চা সমস্ত শরীর স্পঞ্জ করে দিতে পারেন। স্পঞ্জ করলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া শরীরে তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে। 

বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বরের সতর্কতা / কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। 

এতক্ষণ আমরা বাচ্চাদের জ্বর হওয়ার লক্ষণ এবং ঘরোয়া ভাবে করনীয় কি? সে সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। তবে শুধুমাত্র ঘরোয়া চিকিৎসা দিয়ে জ্বর যদি কমানো না যায়। তাহলে অবশ্যই বাচ্চাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক, বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হলে কখন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন। 

যদি দেখতে পান, জ্বরের পরিমাণ ১০২.২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেশি হয় এবং কোনভাবেই শরীরের তাপমাত্রা কমানো যাচ্ছে না। তাহলে অবশ্যই আপনার বাচ্চাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে মোটেও অবহেলা করলে চলবে না, কারণ এই জ্বরের কারণে শরীরে বড় ধরনের কোন অসুখ দেখা দিতে পারে। 

বাচ্চাদের জ্বর হলে, যে খাবারগুলো খাওয়াবেন এবং যেগুলো খাওয়াবেন না। 

সাধারণত বাচ্চাদের যখন জ্বর হয় তখন, কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আবার ঠিক তেমনি এমনই কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো জ্বর হলে শরীরের জন্য এড়িয়ে থাকা উচিত। তাহলে চলুন এক নজরে জেনে নেই, বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হলে। যে খাবারগুলো খাওয়াবেন এবং যেগুলো খাওয়াবেন না সেগুলো নিচে দেওয়া হল। 

যেগুলো খাওয়াবেনঃ

  • বাচ্চা শরীরে জ্বর হলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়াবেন যেমন, লেবু, কমলা এবং আঙ্গুল ফল খাওয়াবেন। কারণ ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনন্য ভূমিকা পালন করে। 
  • জ্বর হলে বাচ্চার শরীরের পানি শূন্যতা পূরণ করার জন্য অবশ্যই তরল জাতীয় খাবার খাওয়াবেন। একই সাথে তরল ভাবে রান্না করা সবজির সুপ খাওয়াতে পারেন। 
  • শরীরের কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান রাখার জন্য নরম ভাত বা সুজি খাওয়াতে পারেন। এবং শরীরের প্রোটিনের জন্য হালকা সিদ্ধ ডিম খাওয়াতে পারেন। 

যেগুলো খাওয়াবেন নাঃ 

  • বাচ্চাদের জ্বর হলে যে খাবার খাওয়াবেন না সেগুলোর মধ্যে অন্যতম কঠিন খাবার। কঠিন খাবার হল তেল চর্বিযুক্ত ভাজা খাবার ,এগুলা হজম শক্তি দুর্বল করে দেয়। তাই এই খাবারগুলা থেকে আপনার বাচ্চাকে অবশ্যই দূরে রাখবেন।
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন চিপস, সাসেস ফুড বার্গার, ফ্রেন্ডস ফ্রাই এবং প্যাকেটজাত খাবার না পারলে খাওয়াবেন না। সফট ড্রিংসের মত মিষ্টি যুক্ত পানীয় খাওয়ানো থেকেও বিরত রাখুন। 

শেষ কথা। বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হওয়ার কারণ।

বাচ্চাদের হঠাৎ কেন জ্বর হয়, এবং এর করণীয় কি ইতিমধ্যেই আমরা এ ব্যাপারে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমরা যারা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ রয়েছি আমাদেরই বছরে প্রায় অনেক বারই জ্বরের সম্মুখীন হতে হয়। এবং বাচ্চাদের শরীরে তো জ্বরের পরিমাণটা অনেকাংশে বেশি। যদি আপনার বাচ্চার জ্বর হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি সতর্ক থাকবেন।

জ্বরের পরিমাণ বেড়ে গেলে হতাশ না হয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এবং সবচেয়ে বড় কথা যেটা মাথায় রাখবেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আপনার বাচ্চাকে কোন প্রকার ওষুধ খাওয়াবেন না। এতে করে, আপনার বাচ্চার সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। 

এতক্ষণ মনোযোগ সহকারে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। 

                              ( খোদা হাফেজ )   








এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url