প্রেসার লো হলে যা করবেন - পেসার লো হওয়ার লক্ষণ।
উচ্চ রক্তচাপ যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর তেমনই নিম্ন রক্তচাপ ও শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যা আমাদের মারাত্মক রোগের দিকে নিয়ে যায়। প্রেশার তো প্রত্যেকটা মানুষের ভিতরে থাকবে এটা স্বাভাবিক। তবে এই প্রেসার বেশি হলেও যেমন আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর ঠিক তেমনি প্রেসার কম হলেও ক্ষতিকর শরীরের জন্য। আজকে আপনাদের সাথে প্রেসার লো হওয়ার লক্ষণ ও পেশার লো হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনা করব।
আপনি যদি প্রেসার লো হবার লক্ষণ গুলো জানতে চান এবং প্রেসার লো কেন হয় তার কারণ জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
- প্রেসার লো হবার কারণ।
- প্রেসার লো হওয়ার লক্ষণগুলো।
- প্রেসার লো হলে যা করণীয়।
- প্রেসার লো হলে কি কি সমস্যা হতে পারে।
- প্রেসার লো হলে যেগুলো খেতে হবে।
- শেষ কথা: প্রেসার লোহার লক্ষণ এবং পেশার লো হওয়ার কারণ।
প্রেসার লো হবার কারণ।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সব সময়ই আমাদের মাথাব্যথা থাকে। আমাদের ভেতরে কারো যদি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে তাহলে সব সময় এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা হয়। তবে নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে আমরা কিন্তু তেমন কোন কিছুই ভাবি না। যেমন আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়েও সচেতন থাকতে হবে তেমনি নিম্ন রক্তচাপ নিয়েও অর্থাৎ লো প্রেসার নিয়েও সচেতন থাকতে হবে। কারণ লো প্রেসার হলে আপনি মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। যদি রক্তচাপ ৯০/৬০ এর আশেপাশে থাকে তাহলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বা লো পেশার বলা হয়। তাহলে চলুন প্রেসার হওয়ার কারণ জেনে নেই।
শরীরে পানি শূন্যতার কারনেঃ
প্রচন্ড গরমের সময় আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘামের ফলে অনেক পানি বের হয়ে যায়। তখন শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। এই পানি শূন্যতার কারণে ও লো প্রেসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে ঃ
হ্যালো পেশার হওয়ার অন্যতম একটি কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রম করা। অনেকে আছে যারা নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়ে পরিশ্রম করার চেষ্টা করে। তবে এটা শরীরের জন্য খারাপ। আপনার শরীর আপনারই সুস্থ রাখতে হবে এটা মাথায় রাখবেন। এই অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে ও লো পেসার হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ রাতকানা রোগ কেন হয় ? এবং রাতকানা রোগের প্রতিকার।
খাবারের চাহিদা না মেটানো ঃ
সুস্থ থাকার জন্য আমাদের অবশ্যই খাবার খাওয়া প্রয়োজন। কেননা আমাদের সুস্থতা নির্ভর করে খাবারের উপর। আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে সুস্থ থাকতে হলে শরীরের কিছু পুস্টি উপাদান পূরণ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। খাবারের চাহিদা ঠিকমতো পূরণ না হলেও আপনার লো প্রেসার হতে পারে।
অতিরিক্ত চিন্তাঃ
আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছি যারা খুব দুশ্চিন্তা করি। কোন ব্যাপারই দুশ্চিন্তা করা যাবে না যেকোনো সমস্যাটা কি সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। এতে করে আপনি দুশ্চিন্তার মতন বড় একটি সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
ঘুমের অভাবে ঃ
আমাদের শরীরের জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনে অত্যন্ত আমাদের ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর প্রয়োজন। শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে লো প্রেসার এর মতন সমস্যার সম্মুখীন হবেন।
অপুষ্টিজনিত সমস্যাঃ
শরীরের পুষ্টির অভাব হলেও লো প্রেসার হতে পারে। আমরা সবাই তো জানি ভালো থাকার জন্য অবশ্যই আমাদের শরীরে পুষ্টি উপাদান থাকতে হবে, এটা সব সময় মনে রাখবেন ।
রক্তশূন্যতা ঃ
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত না থাকলে পেশার লো হতে পারে। আমরা তো সবাই জানি আমাদের শরির কে সুস্থ রাখতে হলে রক্ত অবশ্যই প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত পরিমানে।
প্রেসার লো হওয়ার লক্ষণগুলো।
শরীরে উচ্চ রক্তচাপ ও যেমন সমস্যা তেমনই নিম্ন রক্তচাপ হলেও সমস্যা। এতক্ষণে আমরা শরীরে নিম্ন রক্তচাপের কারণ গুলো জেনেছি। চলুন এখন প্রেসার লো হওয়ার লক্ষণগুলো জেনে নেই।
- প্রেসার লো হয়ার লক্ষণ।
- শরীরের সব সময় দুর্বলতা অনুভব করা।
- স্বাভাবিকের থেকে দ্রুত গতিতে হৃদ স্পন্দন হওয়া।
- অনেক সময় দেখা যায় কতক্ষণ বসে থাকার পর দাঁড়ালে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা।
- কোন কিছু কিছুক্ষণ দেখলে, চোখে ঘোলা দেখান মাঝেমধ্যে অন্ধকার অনুভব করা।
- পানির পিপাসা বেশি পরিমাণে লাগে।
- মাঝেমধ্যে হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া লো প্রেসারের কারণ।
- অনেক সময় শরীরের হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
- মাথা ঘুরানো ও মাথা ঝিমঝিম করা।
প্রেসার লো হলে যা করণীয়।
রক্তের ব্যাপারে অনেক কিছুই তো জানতে পারলাম। তবে এটাও আমাদের জানতে হবে আমাদের মধ্যে যাদের রক্তচাপ হাই রয়েছে, তাদের রক্তচাপ লো করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। আবার যাদের রক্তচাপ লো রয়েছে তাদের রক্তচাপ হাই করা অনেক কঠিন। রক্তচাপ যদি স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয় তাহলেও শরীরের জন্য যেমন খারাপ। তেমনি স্বাভাবিকের থেকে যদি বেশি লো হয় তাহলেও খারাপ। আমাদের শরীরের রক্তচাপ সব সময় স্বাভাবিক রাখতে হবে। যদি আমাদের শরীরে প্রেসার লো হয় তাহলে কি করতে হবে, চলুন এখন তা জেনে নেই।
প্রেসার লো হলে করণীয় ঃ
- অনেক সময় দেখা যায় যারা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খায়, ওষুধ খাওয়ার ফলে যখন নিম্ন রক্তচাপ হয় তখন ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। তবে এটা করা ঠিক না, দরকার হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করতে হবে।
- সমস্যার কারণ চিহ্নিত করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। নিজে ব্যক্তিগতভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। মাথায় রাখতে হবে আপনার একটি ভুল সিদ্ধান্ত অনেক বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
- একটা কথা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, শরীরের রক্তচাপ খুব বেশি কমে গেলে। আমাদের মস্তিষ্ক, কিডনি, ও হৃদপিন্ডের নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই এ সময় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রেসার লো হলে কি কি সমস্যা হতে পারে।
আমরা সব সময় হাই প্রেসার নিয়ে মাতামাতি করি, বেশিরভাগ সময় লো প্রেসার পাত্তা দেই না। শরীরে রক্তচাপ বেশি হোক বা কম দুটোকেই সমান ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। শরীরের রক্তচাপ সব সময় স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে হবে। এখন আমরা প্রেসার লো হওয়ার যেসব কারণগুলো রয়েছে সেগুলো জানবো।
- প্রেসার লো হলে শরীরে হার্টবিট বা পালস স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক দ্রুতগতির হয়।
- রোগীর হাত পা ঠান্ডা হতে থাকে।
- ডায়রিয়া বমি রক্তক্ষরণ, রক্তশূন্যতা, পানি শূন্যতা এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- চোখে ঝাপসা দেখা।
- শরীরে দুর্বলতা অনুভব করা।
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
- শারীরিক ও মানুষের অবসাদ।
- ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া।
প্রেসার লো হলে যেগুলো খেতে হবে।
প্রেসার সম্পর্কে এতক্ষন আমরা যেটা জানলাম, তাতে এতটুকু বুঝেছি প্রেশার অবশ্যই আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে যাতে, শরীরের অতিরিক্ত পেশার না বেড়ে যায় আবার অতিরিক্ত না কমে যায়। প্রেসার লো হলে কোন ধরনের খাবার আপনি খাবেন চলুন তা জেনে নি।
- খাবার স্যালাইন খাবেন প্রেশার লো হলে অবশ্যই খাবার স্যালাইন খাওয়া উচিত। কেননা খাবার স্যালাইন শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। তাই প্রেসার লো হলে অবশ্যই খাবার স্যালাইন খাবেন এটা শরীরের জন্য কার্যকরী।
- নিম্ন রক্তচাপ দেখা দিলে শরীরে অবশ্যই আপনি গ্লূকোজ খাবেন । আশা করি এই গ্লুকোজ খেলে নিম্ন রক্তচাপে আপনি ভালো একটি ফলাফল পাবেন।
- আমরা সকলেই জানি দুধ ও ডিম পুষ্টিকর খাবার। প্রেসার লো হলে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে দুধ ও ডিম লো প্রেসার হলে অবশ্যই খাবেন, এটা আপনার লো প্রেসারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
- লো প্রেসার হলে, আপনি রাতে এক কাপ কিসমিস সারারাত ভিজিয়ে সকালবেলা উঠে খালি পেটে সেগুলো খাবেন। এটি লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
- লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি মধু ও বাদাম খেতে পারেন, এটা বেস কার্যকর।
- তাজা শাকসবজি খাবেন, আমরা সকলেই জানি যে শাকসবজি আমাদের পুষ্টি উপাদানের একটি অন্যতম উৎস। তাজা শাকসবজিতে প্রচন্ড পরিমানে পুষ্টি রয়েছে। শাকসবজি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরি ভূমিকা রাখে।
- সোডিয়াম আমাদের শরীরের রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই রক্তচাপ লো হলে অবশ্যই লবণ জাতীয় খাবার খাবেন এতে করে আপনার প্রেসার তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে।
শেষ কথা: প্রেসার লোহার লক্ষণ এবং পেশার লো হওয়ার কারণ।
এতক্ষণে আমরা জানতে পেরেছি প্রেসার এর সম্পর্কে। প্রেসার আমাদের থাকবে তবে তার একটা নির্দিষ্ট পরিমাপ থাকবে। আমরা সব সময় প্রেসার এর ব্যাপারে সতর্ক থাকবো। একটি সুস্থ শরীরে পারে কেবলমাত্র মানুষের মনকে প্রশান্তি দিতে। আমাদের মধ্যে যদি কারো পেশার থেকে থাকে। অবশ্যই খাদ্য সচেতন হতে হবে এবং পুষ্টিকর জাতীয় খাবার খেতে হবে।
মনোযোগ সহকারে পেশার হওয়ার কারণ এবং এর লক্ষণগুলো পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পোস্ট টি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।
{ খোদা হাফেজব }
ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url