প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলার উপকারিতা ও গুনাগুন জানুন।

আমাদের কারো কাছে কলা নামটি অপরিচিত নয়। কলা একটি বারোমাসি ফল। বছরের প্রায় সব মাসে কলা পাওয়া যায়। কলায় রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন সুস্থ শরীর গঠনে অপরিসীম ভূমিকা রাখে। কলা পাকা অবস্থায় খাওয়া যায় কাচা অবস্থা ও সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। শরির গঠনে কলার উপকারিতা জানতে মনোযোগ সহকারে আমাদের পোস্টটি পড়ুন। 


চলুন জেনে নেওয়া যাক, দৈনিক খাদ্য তালিকায় দুইটি কলার উপকারিতা সম্পর্কে। 

পোস্ট সুচিপত্রঃ 

  • শরীরের ওজন কমায়। 
  • রক্তচাপ স্বাভাবিক করে।
  • অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি  কমায়। 
  • পরিপাকের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কলার গুনাগুন।
  • মানসিক চাপ কমায়। 
  • শক্তি বৃদ্ধিতে কলার গুনাগুন।
  • শেষ কথা। 

শরীরের ওজন কমায়। 

কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ ও প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে। কলা খেলে মানুষের খিদে কম লাগে, পেট ভরা ভরা লাগে। এর ফলে আপনার প্রয়োজনে থেকে বেশি খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না তাই ওজন কমে। এছাড়া কলা আমাদের রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ফেলে। এবং ইনসুলিন হরমোনের প্রতি শরীরের সংবেদনশীলতা বাড়ায়। শরীর যদি ইনসুলের প্রতি সংবেদনশীল না হয়, তাহলে গ্লুকোজ ঠিকমতো শোষিত হয় না। তখন অগ্নাশয় থেকে আরো বেশি ইনসুলিন উৎপন্ন হয়ে থাকে। আর শরীরে বেশি ইনসুলিন থাকলে মানুষের ওজন অনেকাংশেই বেড়ে যায়। তাই শরীরের ওজন কমানোর জন্য কলা আমাদের জন্য আদর্শ একটি খাবার। 

রক্তচাপ স্বাভাবিক করে। 

আমরা অনেকেই প্রতিনিয়ত কলা খেয়ে থাকি। আমরা হয়তো অনেকে জানি আবার জানি না কলায় ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে। আমাদের খাদ্য তালিকায় যে খাবারগুলো আমরা খেয়ে থাকি অবশ্যই তার পুষ্টিগুণ সম্বন্ধে আমাদের জানা উচিত। কলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, এই পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ  কমিয়ে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। 

আরো পড়ুনঃ কিডনি ভাল রাখতে প্রতিদিন কত লিটার পানি খাবেন।

অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি  কমায়। 

রক্তের লোহিত কণিকা কমে গিয়ে বা হিমোগ্লোবিন কমে গিয়ে রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমা রোগ দেখা দেয়। অনিমা বা রক্তস্বল্পতা সম্বন্ধে আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা। মানুষের শরীরে যখন রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় তখন শরীর আকাশে হয়ে যায়, ক্লান্তি বোধ আসে অথবা শ্বাসকষ্টের মত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে রক্তে থাকা আয়রন বা লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে কলা। এছাড়াও কলায় পাওয়া যায় ভিটামিন বি--৬, যা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধিতে অনন্য ভূমিকা রাখে। 

পরিপাকের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কলার গুনাগুন।

কলা আমাদের গ্যাসটো -ইনটেষ্টাইনাল অঙ্গ গুলোর কোনরকম প্রদাহ তৈরি করে না ফলে সহজেই পরিপাক হতে সাহায্য করে। কলায় থাকে এক ধরনের প্রতিরোধের চার্ট। যা পরিপাক না হয়ে বৃহদন্তে গিয়ে অবমুক্ত হয়। বৃহদন্তে এই ষ্টার্চ স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া খাদ্যে পরিণত করে। সাধারণত আমাদের ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে যেসব খনিজ পদার্থ বের হয়ে যায়। এইসব পদার্থ পূরণের জন্য কলার ভূমিকা অপরিসীম। 

মানসিক চাপ কমায়। 

কলা থাকে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপ্টোফ্যান্ট। ট্রিপ্টোফ্যান্ট হল হাসি খুশির হরমোন। অর্থাৎ মানুষের মানসিক স্বস্তি বিরাজের একটি ব্যাকটেরিয়া। এটি সেরোটোনিন তৈরিতে প্রয়োজন। এছাড়া প্রতিটি কলায় গড়ে ২৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। মন ভালো রাখতে ও ভালো ঘুমের জন্য এই ম্যাগনেসিয়াম আমাদের শরীরে খুবই প্রয়োজন। 

ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে। 

কলা সম্বন্ধে ইতিমধ্যে আমরা অনেক কিছুই জেনেছি। এর সাথে এটাও জেনেছি যে কলাতে ভিটামিন বি ৬ রয়েছে। গড়ে একটি কলা আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন বি ৬ এর চাহিদা পাঁচ ভাগের এক ভাগ পূরণ করতে পারে। দেহ সুস্থ কোষ তৈরিতে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন,  হিমোগ্লোবিন ও এমিনো এসিড উৎপাদনে ভিটামিন বি ৬ খুবই দরকার। আবার আমাদের ভিটামিন সি এর দৈনন্দিন চাহিদার ১৫ শতাংশ ই কলাপূরণ করে থাকে। 

শক্তি বৃদ্ধিতে কলার গুনাগুন। 

কলা আমাদের শরীরের অনেক পুস্টির চাহিদা মেটায় তা ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি। তবে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে কলার ভূমিকা ও অপরিসীম। কলায় থাকা পটাশিয়াম আমাদের মাংসপেশীতে ক্রাম্প হাওয়া থেকে রক্ষা করে ও কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। ফলে ভারী অনুশীলনের জন্য শক্তির যোগান হয়। তাই বলা যায় কলা আমাদের শারীরিক পুস্টির চাহিদা মেটাতে অনন্য ভূমিকা পালন করে।

শেষ কথা। 

কলা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে অনেক কিছুই জেনেছি। কলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আমাদের শরীরকে সতেজ রাখে সর্বদাই এবং তার সাথে শক্তি বৃদ্ধিতে অনন্য ভূমিকা রাখে। আমাদের আশেপাশের সব জায়গাতেই কলা পাওয়া যায়, সারা বছরই কারণ কলা একটি বারোমাসি ফল। বেঁচে থাকার জন্য শরীরে পুষ্টি আমাদের খুবই প্রয়োজনীয়। তাই সব সময় আমাদের খাদ্য ও সচেতনতায় থাকতে হবে। কেননা দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্যই পারে কেবলমাত্র আপনার দেহকে সুস্থ সুন্দর এবং রোগমুক্ত রাখতে। বিশেষ করে কলার কথাই বলব কলার পুষ্টিগুণ পেতে আপনি প্রতিনিয়ত দুইটি কলা খাবেন কমপক্ষে। সব সময় একটা কথা মাথায় রাখবেন। 

খাদ্য সচেতন হন, সুস্থ থাকুন,  আপনার পরিবারকেও সুস্থ রাখুন  মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url