মনের আশা পূরণের উপায় ইজমে আজম যেভাবে কাজ করে
সবার উপরে আমরা মুসলিম জাতি।আল্লাহ তাআলা আমাদের মুসলিম হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন,আমাদের বাঁচা মরা খাওয়া দাওয়া। কখন কি হবে সবকিছু আল্লাহ তাআলার নির্দেশ হয়।তবে আমাদের মনে অনেক আশা থাকে এটা করব ওটা করব ইত্যাদি অনেক আশা। হয়তো আমরা এই আশা পূরণের ইসমে আজম এর দোয়াটি অনেকেই জানি এবং অনেকেই জানিনা। আমরা যদি আমাদের মনের আশা গুলো আল্লাহতালার কাছে কবুল করাতে চাই তাহলে এই ইসমে আজম আমলটি আমাদের করতে হবে।
এখন বিষয় হচ্ছে এই আমলগুলো করার জন্য বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। যদি আপনি মনের আশা পূরণের অনন্য উপায় ইসমে আজম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।
মনের আশা পূরণের অনন্য উপায় ইসমে আজম।
মনের আশা পূরণের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানি নাহ।তবে আমরা সবাই চাই আমাদের মনের আশাগুলো যেন আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। আর এই মনের আশা গুলো কবুল করানোর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের আমল করে থাকি। আর এই গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলোর মধ্যে সবথেকে অন্যতম হচ্ছে ইসমে আজম। সাধারণত এই আমলে আল্লাহ তাআলার বিভিন্ন গুণবাচক নামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা সব থেকে বেশি পছন্দ করেন আমরা যাতে তার প্রশংসা করি। আর কেনই বা করবো না আমাদের মানুষ হিসেবে তৈরি করে তিনিই তো পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। বিভিন্ন হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে আমরা যদি ইসমে আজম পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি তাহলে আল্লাহ তাআলা সেই দোয়াগুলো আমাদের মনের চাওয়া পাওয়া গুলো পূরণ করে দেয়।
সব থেকে বড় কথা আপনার মাথায় রাখতে হবে। আল্লাহ তা'আলা কখনোই খারাপ বা অশ্লীল মনের ইচ্ছে গুলোকে পূরণ করে না। তাছাড়া আল্লাহ তা'আলার কাছে কখনো খারাপ মনের ইচ্ছে গুলো চাওয়া যাবে না। আমরা যখন আল্লাহতালার কাছে চাইবো তখন আমাদের ইচ্ছে গুলো নেট এবং ভালো মনের হতে হবে। এই বিষয়গুলো যদি আমাদের জন্য কল্যাণকর হয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ তায়ালা খুব সহজেই আমাদের মনের আশাগুলো পূরণ করে দিবে।
বিভিন্ন হাদিস এবং কিতাবে ইসমে আজমের কথা উল্লেখ করা রয়েছে। এমনকি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে বলে গিয়েছেন আমাদের মনের ইচ্ছে গুলো পূরণ করার জন্য আমরা যেন আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম এবং মহত্বগুলো পাঠ করি। কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ তায়ালার মহত্বের বিষয়গুলো উল্লেখ করা রয়েছে।
ইসমে আজম কি?
ইসমে আজম আসলে কি? আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ এই বিষয়গুলো জানে না।তবে আমরা একটি জিনিস খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারি যে আমাদের মনের ইচ্ছে গুলো পূরণ করার জন্য ইসমে আজম আন্ত জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বিষয়গুলো বিভিন্ন হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমরা যদি এই আমলগুলো করতে চাই তাহলে আমাদেরকে বিস্তারিতভাবে জেনে নিতে হবে যে ইসমে আজম বিষয়টি কি?
ইসমে আজম দুটি শব্দ নিয়ে গঠিত হয়েছে। এই দুটি শব্দের প্রথম হলো ইসমে যার অর্থ হল নাম এবং দ্বিতীয়টি হলো আজম হল যার অর্থ হলো শ্রেষ্ঠ।ইসমে আজম বিষয়টির একত্রে অর্থ হল আল্লাহ তাআলার শ্রেষ্ঠ নাম সমূহ। আমরা সবাই জানি যে আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নাম রয়েছে। এই নাম গুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব প্রকাশ করা হয়েছে। ইসমে আজম হল আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠ নাম সমূহ।
ইসমে আজম কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
মনের আশা পূরণের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইসমে আজম সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি। সাধারণত এখান থেকে অল্প হলেও ধারণা পেয়েছি যে ইসমে আজম আমাদের কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যারা ইসলামে বিশ্বাস করি। আমরা সবাই জানি যে আল্লাহ তাআলাই আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আমাদের যেকোনো কিছু চাইতে হলে আল্লাহ তাআলার কাছে চাইতে হবে। অন্য কারো কাছে কোন কিছু চাওয়া যাবে না। এবং এটা যদি আমরা করিও তাহলে আমাদের সাথে শিরিক করা হবে। যেটা ইসলামে আরো বড় অপরাধ।
আমরা যদি নেক ইচ্ছা আল্লাহর কাছে কোন কিছু চেয়ে থাকি এবং সেটি যদি আমাদের জন্য মঙ্গল হয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ তাআলা সে বিষয়টি দান করে থাকেন।
অর্থাৎ আমাদের মনের ইচ্ছা গুলো পূরণ করে দেন। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের আমল করে থাকি আল্লাহতালাকে সন্তুষ্ট করার জন্য। এই আমল গুলোর মধ্যে অন্যতম আমল হচ্ছে এই ইসমে আজম।
বিভিন্ন হাদিসে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসমে আজম সম্পর্কে বলে গিয়েছেন।তিনি এ বিষয়টি ভালোভাবে উল্লেখ করেছেন যে আমরা যদি ভালোভাবে ইসমে আজম আমলটি করে আল্লাহ তাআলার কাছে কোন কিছু চাই সৎ উদ্দেশ্যে তাহলে হয়তো আল্লাহ তাআলা চাইলে আমাদের মনের ইচ্ছে গুলো খুব অল্প সময়ে পূরণ করতে পারে। তাই আমাদের ইচ্ছে পূরণ করার জন্য ইসমে আজম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আমাদের জীবন।
ইসমে আজম কখন পড়তে হয়।
জেনে নিন ইসমে আজম কখন পড়তে হয়। আমরা অনেকেই ইসমে আজম আমলটি করতে চাই কিন্তু আমরা এই আমলটি কখন করতে হয় সঠিকভাবে জানি না অর্থাৎ ইসমে আজমের যে সকল দোয়া রয়েছে ওগুলো কখন করলে বেশি উত্তম হবে আমাদের অনেকের জানা নেই। যেহেতু আমরা আমাদের মনের ইচ্ছে গুলো পূরণ করানোর জন্য এই আমলটি করব এতে করে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে ইসমে আজম দোয়াটি আমরা কখন করব।
আমরা যদি চাই আল্লাহ তা'আলা আমাদের এই দোয়াগুলো কবুল করুক তাহলে আমাদের নামাজ শেষ করার পরে অর্থাৎ সালাম ফেরানোর পরে আল্লাহ তালার কাছে দোয়া করতে হবে। আল্লাহ তাআলার কাছে সবথেকে ফজরের নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। আপনি চাইলে মাগরিবের নামাজ পড়েও ইসমে আজম আল্লাহ তাআলার কাছে নিজের মনের ইচ্ছে গুলো প্রকাশ করতে পারেন।ইনশাআল্লাহ হয়তো আল্লাহ তায়ালা আমাদের মনের ইচ্ছে গুলো পুরন করবেন।
ইসমে আজম কিভাবে পড়বেন।
মনের আশা পূরণের অনন্য উপায় হচ্ছে ইসমে আজম বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। এখন বিষয় হচ্ছে এই গুরুত্বপূর্ণ আমল কিভাবে করব। কিভাবে এই আমল করতে হয় এই বিষয়টি ইতিমধ্যে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি এই আমলটি কিভাবে পড়বেন বিষয় কিছু ধারনা দেব। আজকের এই পোস্টটি আজম সম্পর্কে সাথে সাথে এই দোয়াগুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
আপনি যেকোনো সময় পাক পবিত্র হয়ে আল্লাহ তাআলার কাছে ইসমে আজম পরে দোয়া করতে পারেন এতে কোন প্রকার সমস্যা নেই তবে ইসমে আজম পাঠ করার সব থেকে উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয় নামাজ শেষ করার পরের সময়। প্রথমে ফরজ ইবাদাত নামাজ শেষ করতে হবে তারপর সালাম ফিরিয়ে ইসমে আজম পড়ে আল্লাহ তাআলার কাছে মনের ইচ্ছে গুলো বলতে হবে।
ইসমে আজম কতবার পড়বেন।
ইসমে আজম কতবার পড়বেন এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা প্রথমবার এই আমলটি করে সাধারণত তাদের মধ্যে এই প্রশ্নটি বেশি শোনা যায়। বেশ কিছু দোয়া রয়েছে যেগুলো নির্দিষ্ট কিছু বার পড়তে হয়। তবে আমরা যেহেতু ইসমে আজম সম্পর্কে আলোচনা করছি সেহেতু এ বিষয়ে জানিয়ে দিতে চাই যে এখানে আল্লাহ তায়ালার মহত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা নিজের মহত্ত্বের বিষয়গুলো অনেক বেশি পছন্দ করে থাকেন।
তাই আপনি যত খুশি ততবার ইসমে আজম পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট বার পড়তে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। নামাজ শেষ করার পরই আপনাকে এই দোয়াগুলো পড়তে হবে এরপরে আল্লাহ তায়ালার কাছে নিজের মনের ইচ্ছে গুলো বলতে হবে। চাইলে আপনি যতবার খুশি এ দোয়াটি পড়তে পারেন। যত বেশি কিছু আজম পাঠ করবেন আল্লাহ তা'আলা আপনার প্রতি তত বেশি খুশি হবেন।
ইসমে আজম দোয়া কয়টি।
আপনি ইতিমধ্যে জেনেছেন যে ইসমে আজম দোয়াটি হল মনের আশা পূরণের একটি দোয়া। আমরা যেহেতু এই আমল গুলো করে আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করতে চাই সে হেতু আমাদেরকে আমাদের কে জেনে রাখতে হবে ইসমে আজম দোয়া কয়টি। পবিত্র কুরআনে বিভিন্ন জায়গায় ইসমে আজমের দোয়াটি উল্লেখ করা রয়েছে।
উচ্চারণ :ওয়া ইল্লাহুকুম ইলাহু ওয়াহিদ, লা ইলাহা ইল্লা হু আর রহমানুর রহিম।
অর্থ :তোমাদের উপাস্য একমাত্র আল্লাহ। তিনি ব্যতীত আর কোন সত্যিকার উপাস্য নেই। তিনি পরম করুনাময় অতি দয়ালু (সূরা বাকার আয়াত নাম্বার ১৬৩)
উচ্চারণ : আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম।
অর্থ :আল্লাহ তিনি, যিনি ছাড়া কোন মাবুদ নাই। তিনি চিরঞ্জীবী, সমগ্র জগতের নিয়ন্ত্রক ( সূরা আল ইমরানের ১নং আয়াত)
ইসমে আজম পাঠ করার ফজিলত।
আপনি ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন ইসমে আজম পাঠ করার ফজিলত কতখানি। কারণ যে দোয়া পড়ে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া চাইলে বা মনের ইচ্ছে পোষণ করলে খুব তাড়াতাড়ি আল্লাহ তাআলা তা কবুল করে। এতে করে বোঝা যায় এই দোয়াটির ফজিলত অপরিসীম। আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি যে ইসমে আজম আমাদের মনের আশা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এখানে আল্লাহ তাআলার মহত্বের কথা উল্লেখ করা রয়েছে।
আর আমরা সবাই জানি যে আল্লাহ তাআলা নিজের প্রশংসা কারীকে খুব পছন্দ করে থাকেন। এই প্রশংসা হতে হবে মন থেকে কোন লোক দেখানো আমল হলে চলবে না। একটা কথা সবসময় মাথায় রাখতে হবে আল্লাহ তাআলা আমাদের মনের সকল খবর বা খবর জানেন। তাই আমাদেরকে এই বিষয়টি মাথায় রেখে ইসমে আজম পাঠ করতে হবে এবং আমাদের মনের ইচ্ছে গুলো আল্লাহ তায়ালার কাছে বলতে হবে।
আমাদের মনের বিভিন্ন ইচ্ছে রয়েছে সাধারণত এই ইচ্ছে গুলো অনেক সময় পূরণ হয় আবার অনেক সময় হয় না। যদিও ইচ্ছে গুলো নেক এবং সৎ ছিল তারপরও তিনি তা কবুল করেনি বা ইচ্ছে গুলো পূরণ করেনি। তবে এখানে ভুল বোঝার কিছু নেই। আল্লাহতালা যেটা ভালো মনে করবেন আমাদের জন্য তিনি সেটাই করবেন হতাশ হওয়া যাবে না। সর্বদা আল্লাহ উপর ভরসা রাখতে হবে।
ইসমে আজম দোয়াটি আরবিতে।
ইসমে আজম দোয়াটি আরবি অনেকেই জানতে চায়। সাধারণত আমরা সবাই আরবি পরে অভ্যস্ত নই।যার ফলে বাংলা উচ্চারণ বেশি পড়ে থাকি। তবে যারা আরবি জানে তারা ইসমে আজম আরবিতেই পড়তে চায়। আমাদের পোষ্টের মধ্যে বাংলা উচ্চারণ সহ আরবিতে ইসমে আজম দোয়াটির একটি পিকচার পোস্ট করছি
ষেশ কথা।
মনের আশা পূরণের অনন্য উপায় ইসমে আজম সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আলোচনা। আপনি যদি নিজের মনের ইচ্ছে গুলো পূরণ করতে চান তাহলে আপনার উচিত নিয়মিত নামাজ পড়া অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা হওয়া। কারণ আল্লাহ তা'আলা তার প্রিয় বান্দাদের মনের ইচ্ছে গুলো অল্প সময়ে পূরণ করে।এবং নামাজ শেষ করে আপনি এই আমলটি করবেন আশা করছি এই আমল গুলো করলে আল্লাহ তাআলা আপনার মনের ইচ্ছে গুলো খুব তাড়াতাড়ি পূরণ করে দিবে। তবে সব থেকে বড় কথা নিজেকে সৎ রাখবেন হারাম খাদ্য খাবেন না মানুষের উপকার করবেন আল্লাহ তাআলার একজন প্রিয় বান্দা হবেন।
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক বিষয় যদি নিয়মিত জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করে পাশে থাকুন। এই ধরনের প্রয়োজনীয় পোস্ট আমাদের ওয়েবসাইটে করে থাকি।
ভদ্রতা বজায় রেখে কমেন্ট করুন! কারন,প্রতিটা কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url